শবরিমালা মন্দির ও সুপ্রিম কোর্ট (Photo Credit: File Photo)

নতুন দিল্লি, ১৪ নভেম্বর: শবরিমালা মন্দিরে (Sabarimala Temple) সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি নিয়ে একমত হতে পারল না পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও আজকের রায়ের দিকই তাকিয়েছিল গোটা দেশ। এক প্রকার বাধ্য হয়েই সুপ্রিম কোর্ট (Apex Court) শবরিমালা সংক্রান্ত মামলাটি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে দিল। এবার সাত বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ (7-judge bench) আবেদনগুলি বিবেচনা করবে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিয়ে বিতর্কটি এখন বৃহত্তর আকার নিয়েছে। সব বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক ছিলই। একইসঙ্গে মুসলিম ও পার্সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রাচীন বিশ্বাস অনুসারে শবরিমালায় ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। মনে করা হয়, ঋতুমতী মহিলারা মন্দিরে প্রবেশ করলে মন্দিরের প্রধান বিগ্রহ আইয়াপ্পার কৌমার্যব্রত ভেঙে যাবে। এই বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়ে মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দাবি করেন মহিলারা। মানবশৃঙ্খল গড়ে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ-আন্দোলন। মামলা গড়ায় দেশের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। অবসরের আগে তাঁর শেষ রায়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছিলেন, লিঙ্গভিত্তিক যে বৈষম্য গড়ে উঠেছে শবরিমালার মন্দিরকে কেন্দ্র করে সেটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সুপ্রিম কোর্ট এই অযৌক্তিকতাকে সমর্থন করে না। সংবিধানও এই লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে। মন্দিরের নিয়ন্ত্রক ত্রিবাঙ্কুরের দেবাস্বম বোর্ডও শীর্ষ আদালতের রায় মেনে নেয়। ফলে সব বয়সী মহিলারাই মন্দিরে ঢোকার প্রবেশাধিকার পেয়ে যান। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এর রায় কেরালা সরকার মেনে নিক তা চায় না বিজেপি। বরং মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়টিতে সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দিলে বরং বিজেপি স্বস্তি পায়। আরও পড়ুন-Ayodhya Verdict: সম্প্রীতির খাতিরে অযোধ্যার সুপ্রিম রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবে না সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, জাফর ফারুকি

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের এই রায়কে কেন্দ্র করে গত বছরই উত্তাল হয়ে ওঠে কেরালা। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় দেয়, ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলারাও আয়াপ্পা মন্দিরের গর্ভ গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় কার্যকর করতে পারেনি কেরলের বামপন্থী সরকার। মন্দিরে প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিজেপি। এক বছর পরেও সেই রায় অমীমাংসিত রইল।