৭ মে,২০১৯: ভারতের নাগরিক নন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী(Rahul Gandhi)। এমনই দাবি করে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যমস্বামী। বিজেপি সাংসদের দাবি ছিল রাহুল নাকি ব্রিটিশ নাগরিক(British Citizen)। সেই দাবির প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাহুলকে নোটিস পাঠানো হয়। এই নিয়ে নতুন করে চড়েছে রাজনৈতিক পারদ। আমেঠিতে প্রচারসভা থেকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র (Priyankka Gandhi)বলেছেন, গোটা দেশ জানে রাহুল এদেশে জন্মেছেন। প্রিয়াঙ্কার এই দাবি যে কতটা সত্যি সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে কেরলের এই নার্সের বক্তব্যে। ঘটনাচক্রে নেই নার্সের বাড়িও ওয়ানাড়ে(Waynad) এই কেন্দ্রে এবার কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন রাহুল।
সেকথা বলতে গিয়ে এখনও শিহরিত হয়ে যান ৭২ বছরের প্রাক্তন নার্স রাজাম্মা ভবতিল। সেটা ১৯৭০ সালের ১৯শে জুন, দিল্লির হোলি ফ্যামিলি হাসপাতাল তখন এক ভিআইপি–কে নিয়ে বেজায় ব্যস্ত। লেবার রুমে ডাক্তারদের বিশেষ টিম ও কয়েক জন নার্স। সেই নার্সদের মধ্যে একজন ছিলেন রাজাম্মা।
প্রসূতির নাম সোনিয়া গান্ধী। বাইরে সাদা কুর্তা পরে দাঁড়িয়ে বাবা রাজীব গান্ধী ও কাকা সঞ্জয় গান্ধী। যেন কালকের ঘটনা এ ভাবেই বলে চলেন রাজাম্মা ভবতিল। তাঁর কথায়, ‘অবশেষে এল সেই মুহূর্ত। ভূমিষ্ঠ হল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর (Idira Gandhi)নাতি। ফর্সা–নরম তুলতুলে এক শিশুকে কোলে নিলাম। তখন সে কাঁদছে! সেদিন কী ভোলার! ওর মা–বাবার আগে আমি ওকে কোলে নিয়েছিলাম!’ প্রধানমন্ত্রীর নাতি বলে কথা, ফলে টিমের সবাই ওকে একবার করে কোলে নিয়েছিলেন। সোনিয়ার (Sonia Gandhi)নর্ম্যাল ডেলিভারি হয়েছিল।
কথাগুলি বলতে বলতে কেমন যেন মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন রাজাম্মা। অবসর নেওয়ার পর ওয়ানাড়েই থাকেন তিনি।
রাজাম্মা বিভোর হয়ে যান সেই স্মৃতিতে। বলতে থাকেন.. ‘সোনিয়া ছিলেন মাটির মানুষ। কোনও ভিআইপি সুলভ হাবভাব ছিল না তাঁর । ডাক্তার ও সিস্টারদের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে সহায়তা করেছিলেন। লেবার রুমে ওঁর সঙ্গে কথাও বলেছিলাম।’
জন্মের পর হাসপাতালের নিয়ম মেনেই রাহুলকে নার্সারিতে রাখা হয়েছিল রাহুলকে। এমনকী ইন্দিরা গান্ধী পাটনা সফর শেষে তিন দিন পরে নাতিকে দেখতে আসেন, তিনিও নার্সারির ভিতরে ঢোকেননি। বাইরে থেকেই দেখেছিলেন। রাজীব–সঞ্জয়ের ব্যবহারও ছিল অত্যন্ত ভালো। তিনি স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘ওঁদের লেবার রুমে ঢোকার অনুমতি ছিল, কিন্তু ওঁরা কেউই তা করেননি। বাইরে আর পাঁচ জনের মতোই অপেক্ষা করছিলেন।’
তবে ওয়ানাড়ে রাহুল প্রার্থী হওয়ার পর থেকে একবারও দেখেননি। রাহুলও হয়তো জানেন না রাজাম্মার কথা।
তবে এই সংকট মুহূর্তে রাহুলের অনেকটাই উপকার করে দিলেন রাজাম্মা। তাঁর বক্তব্য বিজেপির দাবিকে সপাটে খারিজ করে দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে।