PM Narendra Modi bids emotional farewell (Photo Credits: ANI)

নয়াদিল্লি, ৯ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যসভায় (Rajyasabha) দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখার সময় বিরোধী দলের নেতা-সহ বিদায়ী সাংসদদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এই প্রথম বিরোধী দলনেতাদের জন্য এমন আবেগতাড়িত হতে দেখা গেল মোদিকে। প্রবীণ বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের (Ghulam Nabi Azad) আজই ছিল রাজ্যসভায় শেষ দিন। রাজ্যসভার সংসদের অবসরের দিনে তাঁকে স্মরণ করতে গিয়ে আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। কথা বলতে গিয়ে তাঁর গলা ধরে আসে। বারবার কথা বলতে গিয়ে থেমে যান তিনি। অবশেষে আর না পেরে চোখের জল মুছে তিনি বলেন, "গুলাম নবি আজাদের (বিরোধী দলনেতা) পরিবর্তে যিনি এই পদের দায়িত্ব সামলাবেন, তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন হবে এই কাজটা। কারণ তিনি শুধু নিজের দল নিয়েই চিন্তিত থাকতেন না। দেশের উন্নয়নের জন্যও তিনি সমানভাবে ভাবতেন।"

রাজ্যসভার অধিবেশনের শেষদিনে সমস্ত তিক্ততা ভুলে কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, "ক্ষমতা আসবে এবং যাবে। কিন্তু কীভাবে ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করে সমস্ত দায়িত্ব সামলাতে হয়। সেটি গুলাম নবি আজাদের থেকে শেখা উচিত। আমি ওঁকে নিজের সত্যিকারের একজন বন্ধু হিসেবেই সবসময় মেনে এসেছি।"

নরেন্দ্র মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় গুজরাতের যেসমস্ত বাসিন্দারা নিহত হয়েছিলেন, তাদের দেহ রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিলেন গুলাম নবি আজাদ নিজে। মোদি বলেন, "গুলাম নবি আজাদ এবং প্রণব মুখার্জি সেদিন যেভাবে পুরো পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিলেন, আমি সেদিনের কথা কোনওভাবেই ভুলতে পারব না। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে মনে হচ্ছিল তাঁর পরিবারের কেউ আটকে পড়েছেন কাশ্মীরে।"

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, "জম্মু-কাশ্মীরে গুজরাত থেকে আগত তীর্থযাত্রীদের উপর হয়েছিল সেদিন জঙ্গিহানা। আমাকে সেদিন ফোন করেছিলেন গুলাম নবি আজাদ। শুধুমাত্র গোটা ঘটনাটির বর্ণনা দেওয়ার জন্য সেদিন তিনি ফোন করেননি। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর কান্না কিছুতেই থামছিল না। সেসময় প্রণব মুখার্জি ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, তিনি ভারতীয় বায়ুসেনাকে অনুরোধ করে গুজরাতের বাসিন্দাদের দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করিয়েছিলেন। সমস্ত ব্যবস্থা সঠিকভাবে হয়ে গেলেও নিশ্চিন্ত হতে পারেননি গুলাম নবি আজাদ। তিনি কিছুক্ষণ পরে আমাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে তিনি বিমানবন্দরে চলে গিয়েছেন।"

নরেন্দ্র মোদি আবেগবিহ্বল হয়ে সবশেষে বলেন, "আমি আপনাকে অবসর নিতে দেব না। আমি আপনার থেকে উপদেশ আগামিদিনেও নিতে চাই। আমার কাছে আপনার দরজা সবসময়ের জন্য খোলা রয়েছে।"