Opposition Meeting in Patna. (Photo Credits: ANI)

নতুন দিল্লি, ২৩ জুন: পটনায় হয়ে গেল বিজেপি বিরোধী ১৭টি দলের মহাবৈঠক। এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধন ইস্য়ুতে বিরোধীরা এককাট্টা হলেও নির্বাচন বা জোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আজ, শুক্রবার পটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের চেষ্টায় সেটাই হল। কেন্দ্রের দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স ইস্য়ুতে কংগ্রেস এখনও কেজরিওয়ালের সরকার সমর্থন না জানানোয়, বিরোধী জোটের বৈঠকে আম আদমি পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব থাকলেও যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এল না কেজরিওয়ালের দল। পাশাপাশি কংগ্রেস থাকায় কেসি আর-এর বিআরএসও থাকল না বিরোধী দলের মহাবৈঠক। তবে এর বাইরে এদিন বিরোধীদের মহাবৈঠকে ঐক্যের সুর।

নীতীশ কুমার জানালেন, এদিনের বৈঠক বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত সব দলের নেতারাই বিজেপির বিরুদ্ধে এক হয়ে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে লড়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন বলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি (ইউ) প্রধান জানিয়েছেন। আগামী মাসে কংগ্রেস শাসিত হিমাচল প্রদেশের সিমলায় আয়োজিত হবে বিরোধী দলগুলির দ্বিতীয় মহাবৈঠক। সিমলার বৈঠকে ঠিক হবে বিরধী দলগুলির ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের অ্যাজেন্ডা।

দেখুন ভিডিয়ো

দিল্লির প্রশাসনিক ইস্য়ুতে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্সে কংগ্রেসের সমর্থন আদায় করতে না পেরে ক্ষুব্ধ অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে কেজরি বৈঠকে উপস্থিত বাকি সব দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বললেন, "দারুণ আলোচনা হল। ইতিহাস এখান থেকে শুরু হল। ২০২৪ লোকসভা সবাই আমরা এক হয়ে লড়ব। জুলাইয়ে পরবর্তী বৈঠকে সব ঠিক হবে।"

বিরোধী জোটের মহাবৈঠককে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, এটা ওদের একসঙ্গে ছবি তোলার সেরা সুযোগ। বিরোধীদের ঐক্যমত হওয়া কার্যত অসম্ভব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একা হারাতে পারবে না এই কথা স্বীকার করার জন্য কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানাই। শুক্রবার পাটনায় আয়োজিত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে কংগ্রেস এই কথা ঘোষণা করার পরই তাদের কটাক্ষ করে এই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি।

বিরোধীদের এই মহাবৈঠকের পর ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিরোধীরা সবাই একমত হয়ে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেবে তা হয়তো হবে না, তবে মোদীর পক্ষে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরা যাতে মসৃণ না হয় তার জন্য এক হয়ে লড়ার অলিখিত প্রতিশ্রুতি থাকছে। বিরোধী দলগুলির মধ্যে আপ-কেই একটু বেসুরে শুনিয়েছে। তবে মণীশ সিসোদিয়ার জেল, দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা ইস্য়ুতে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স নিয়ে বিজেপি-র ওপর কেজরির দল এতটাই ক্ষুব্ধ যে তারা জোটের পথেই পা দিয়ে। এর আগে আপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন, নয়া সংসদ ভবন বয়কট করেছিল।

বিরোধী জোটের মহাবৈঠকে যে সব দলের নেতারা উপস্থিত থাকলেন

১) কংগ্রেস: সভাপতি মল্লিকার্জন খাড়গে, রাজ্যসভা সাংসদ কেসি ভেনুগোপাল, রাহুল গান্ধী

২) তৃণমূল: সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, ডেরেক ও'ব্রায়েন

৩) এনসিপি: সভাপতি শরদ পওয়ার, সুপ্রিয়া সুলে, প্রফুল্ল প্যাটেল

৪) শিবসেনা (ইউবিটি): প্রধান উদ্ধভ ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে, সঞ্জয় রাউত

৫) সমাজবাদী পার্টি: প্রধান অখিলেশ যাদব

৬) আম আদমি পার্টি: অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ভগবন্ত মান, রাঘব চাড্ডা, সঞ্জয় সিং

৭) সিপিআই (এম): সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি

৮) ডিএমকে : প্রধান এমকে স্ট্যালিন

৯) পিডিপি: মেহবুবা মুফতি

১০) ন্যাশনাল কনফারেন্স: ওমর আবদুল্লা

১১) ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা: হেমন্ত সোরেন

১২) আরজেডি: লালুপ্রসাদ যাদব, তেজস্বী যাদব, মনোজ ঝা

১৩) জেডি (ইউ)- নীতীশ কুমার, লালন সিং

১৪) সিপিআই: ডি রাজা

১৫) সিপিআই (এমএল)- দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

মহাবৈঠকে অনপুস্থিত

কেসি আর-এর বিআরএস, রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি)

বৈঠকে ডাকা হয়নি

বিএসপি- মায়াবতীর দলকে।