শনিবার এই নিয়ে পুরীর সি বিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৈকুন্ঠ প্রধান নামে ওই আক্রান্ত কর্মী। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ললিত ছাড়াও আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই হামলার সময় অভিযুক্তকে প্রতক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করেছিল রাজভবনেরই ছয় কর্মী। এমনকী খোদ রাজ্যপালকে এই অভিযোগ জানানোয় তিনি নাকি কর্মীর ওপরেই বেজায় চটে যায়। এবং তিনি কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ৭ জুলাই রথযাত্রার দিন। সেদিন ওড়িশায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূও এসেছিলেন। তাঁর এই সফরে আগে ৫ জুলাই থেকে রাজভবনের তদারকির দায়িত্ব পান বৈকুন্ঠ। ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি সমস্ত প্রস্তুতি কে কোথায় যাবেন, কাকে কোথায় পাঠানো হবে সমস্ত কিছু তাঁর কাঁধে ছিল। রথযাত্রা অনুষ্ঠানের দিন পুরী স্টেশনে রাজভবনে আসার জন্য বিশিষ্ট মানুষদের পিক আপ করতে গাড়ি পাঠানো হয়। সেই তালিকায় ছিলেন রাজ্যপালের ছেলেও। তবে তাঁর জন্য বিলাসবহুল গাড়ি না দিয়ে পাঠানো হয় মারুতি সুজুকি গাড়ি। বৈকুন্ঠকে বলা হয় যে গাড়িটি পাল্টে দিতে, কিন্তু সেই সময় কোনও গাড়ি না থাকায় ললিতকে তিনি বলেন ওই গাড়িতেই রাজভবনে আসতে।
আর এতেই বেজায় চটে যান ললিত কুমার। সারাদিন কিছু না বললেও ওইদিন রাত ১১টা ৪৫ নাগাদ রাজ্যপালের ব্যক্তিগত রাধুনি আকাশ সিং বৈকুন্ঠকে বলে তাঁকে ললিত কুমার ডাকছেন। কিছু না ভেবে আকাশের সঙ্গে রাজভবনের স্যুট ৪-এ যান, যেখানে ললিত ছিলেন। আকাশ বেরিয়ে গেলে ললিত বৈকুন্ঠের উদ্দেশ্যে অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। অভিযোগ, বৈকুন্ঠ কোনও প্রশ্ন করতে গেলে সজোরে তাঁকে থাপ্পড় মারে রাজ্যপালের ছেলে। তারপর একের পর এক চড়, ঘুষি মারতে শুরু করে ললিত। ভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বেরিয়ে একটি জায়গায় লুকিয়ে পড়ে সে।
এরপর ললিতের নির্দেশে দুই বডিগার্ড এসে আমায় টেনে হিঁচড়ে রুম নম্বর ৪-এ নিয়ে যায়। সেখানে আরও চারজন রাজভবনের কর্মী ছিল। তাঁদের সামনে অকথ্য গালিগালাজ করে ললিত। এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চড়, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে সে। বেশকিছুক্ষণ মারধরের পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই অবস্থায় বাড়ি গেলে স্ত্রী সহজকে সবকথা খুলে বলে। তারপর তাঁর চিকিৎসা করা হয়। জানা যাচ্ছে, এই মারধরের কারণে বা হাতে মচকে গিয়েছে। একটু সুস্থ হয়ে ওঠার পর রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালকে সব জানালেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। আর তারপরেই পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানায় বৈকুন্ঠ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ