কানপুর: টিভি সিরিয়াল (TV serial) দেখে ছক (plan) তৈরি করেছিল। আর ঠিক সেই অনুযায়ী প্রেমিক (lover) ও তার বন্ধুদের (friend) সাহায্যে স্বামী (husband) ও শ্বশুরকে (father-in-law) নৃশংসভাবে হত্যা (Brutally killed) করল এক গৃহবধূ (Housewife)। পাশবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কানপুরে (Kanpur)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বপ্না (Sapna) নামে ওই মহিলাকে (woman) ২০২০ সালে বিয়ে করেছিল কানপুরের সাচেন্দি পুলিশ থানা এলাকার (Sachendi police station area) বাসিন্দা রিষভ ত্রিপাঠী (Rishabh Tripathi)। এদিকে বিয়ের আগে থেকে স্বপ্নার সম্পর্ক (an affair) ছিল রাজু গুপ্তা (Raju Gupta) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। বিয়ের পরেও সেই সম্পর্ক বজায় রেখে স্বামীকে খুন করে তাঁর সম্পত্তি (property) হাতিয়ে প্রেমিককে নিয়ে সুখে সংসার করার পরিকল্পনা নিয়েছিল সে। সেই অনুযায়ী গত ২৭ অক্টোবর রিষভ যখন একটি বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণ খেয়ে ফিরছিলেন তখন স্বপ্নার প্রেমিক রাজু ও তার তিন সঙ্গী রাস্তাতেই তাঁকে আক্রমণ করে। এর ফলে রিষভ গুরুতর জখম হলেও প্রাণে বেঁচে যান। তারপর তিনি ভর্তি বেশ কিছুদিন ধরে একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ঘুণাক্ষরেও এই ঘটনার পিছনে যে তাঁরই স্ত্রী আছে সেটা ধরতে পারেননি তিনি। উলটে ওই ভয়ানক মহিলা প্রতিবেশীর নামে আক্রমণের অভিযোগ জানিয়ে থানাতে একটি এফআইআরও দায়ের করে। যদিও সেটাই যে পরে তার কাল হয়ে দাঁড়াবে সেটা ভাবতে পারেনি। আরও পড়ুন: Telangana kidnapping case: তৎপরতার ফল! অপহৃত যুবতীকে উদ্ধারের পাশাপাশি ৮ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ
এরপর রিষভ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতেই নতুন ছক কষে স্বপ্না। একটি টিভি সিরিয়ালে সে দেখেছিল কিছু ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনকী তার মৃত্যু পর্যন্ত হয়। সেই সিরিয়ালের ঘটনা অনুযায়ী স্বামীকে ওষুধের ওভারডোজ (overdose of medicines) দিতে থাকে স্বপ্না। পাশাপাশি বাড়ির সামনে থাকা একটি ওষুধের দোকানের মালিক সুরেন্দর সিংকে হাত করে তার মাধ্যমে কিছু ইঞ্জেকশনও (injection) দেয়। এর ফলে লিভার খারাপ হয়ে কানপুরের হালেট হাসপাতালে ভর্তি হন রিষভ। পরে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে রিষভের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে। কিন্ত, তাতে কিছু মেলে না। এদিকে সাচেন্দি থানার পক্ষ থেকেও আগের এফআইআরের (FIR) ভিত্তিতে তদন্ত চলছিল। তাতে পুলিশ জানতে পারে রিষভের উপর যেখানে আক্রমণ হয়েছিল সেখানে থাকা দুই ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে ফোনে যোগাযোগ ছিল স্বপ্নার। এর ভিত্তিতেই স্বপ্নাকে জেরা করতে শুরু করে পুলিশ। আর তাতেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। শুধু স্বামী নয়, জানা যায় মাস চারেক আগে একইভাবে ওষুধের ওভারডোজ দিয়ে নিজের বয়স্ক শ্বশুরকেও খুন করেছিল স্বপ্না। এরপরই স্বপ্না, তার প্রেমিক রাজু, ওষুধের দোকানদার সুরেন্দর সিং ও রাজুর এক সঙ্গীকে সত্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পুলিশের কাছে রাজু জানিয়েছে, রিষভের উপর আক্রমণ সে একাই করেছিল। আর এর জন্য স্বপ্না তাকে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিল। এদিকে ভয়াবহ এই ঘটনার কথা জানতে পেরে হতবাক হয়ে পড়েছেন রিষভের প্রতিবেশীরা।