নয়াদিল্লি: সোমবার ধর্ষিতার (rape victim) সম্মানরক্ষার্থে ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme court) ডিভিশন বেঞ্চ। ধর্ষণের মামলায় নিষিদ্ধ হল দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দু আঙুলের পরীক্ষা (Two-Finger Test)। আজও সমাজে কেন এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত আছে তা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে এই ধরনের পরীক্ষা না করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বলল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এতদিন ধর্ষিতার মহিলার যোনিতে দু আঙুল প্রবেশ করিয়ে ধর্ষণের প্রমাণ সংগ্রহ করা হত। কিন্তু, সোমবার সু্প্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandrachud) ও হিমা কোহলির (Hima Kohli) ডিভিশন বেঞ্চ এই পরীক্ষার বদলে ভ্যাজাইনাল ল্যাক্সিটি টেস্ট (Vaginal laxity test) করার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার ঝাড়খণ্ডের একটি ধর্ষণের মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দেয় বহু বছরের পুরনো টু ফিঙ্গার টেস্ট একজন মহিলার মন ও গোপনীয়তার অধিকারের উপর প্রচণ্ড পরিমাণে আঘাত হানে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে আজকের দিনেও এই ধরনের অবৈ়জ্ঞানিক ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয় বহনকারী দু আঙুলের পরীক্ষা বিদ্যমান রয়েছে। এর ফলে নির্যাতিতার আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। এর বদলে এবার থেকে ভ্যাজাইনাল ল্যাক্সিটি টেস্ট করতে হবে। যাতে নির্যাতিতার মনের উপর কোনও আঘাত না আসে। এটা কখনই বলা যায় না যে একজন যৌন সঙ্গমে সক্রিয় মহিলার কোনওদিন ধর্ষণ হবে না।
এই বিষয়ে আদালতের তরফে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যগুলির ডিজিপি (DGP) ও স্বাস্থ্যসচিবদের (Health secretaries) টু ফিঙ্গার টেস্ট যাতে না হয় তা সুনিশ্চিত (ensure) করতে বলেছে। এরপরও যদি কোনও ধর্ষণের মামলায় এই পুরনো পরীক্ষা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয় তাহলে আদালত অবমামনার মামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরগুলিকে অবিলম্বে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে টু ফিঙ্গার টেস্ট সংক্রান্ত সমস্ত স্টাডি মেটিরিয়ালও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।