লোকসভা নির্বাচন পরবর্তীকালে একটা জিনিস স্পষ্ট যে মানুষ কোনও রাজনৈতিক দলকেই চোথ বন্ধ করে ভরসা করতে পারছে না। চলতি বছরে মোট চারটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। আর এই চার রাজ্যের মধ্যে কোথাও এনডিএ এগিয়ে, কোথাও আবার ইন্ডিয়া। তবে মহারাষ্ট্রকে (Maharashtra) আবারও নিজেদের দখলে রাখতে পারবে, এই নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ছিল উদ্ধব ঠাকরে, রাহুল গান্ধী ও শরদ পাওয়াররা। কারণ আজ থেকে ঠিক ২ বছর আগে মহাজোটের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নতুন করে সরকার গড়েছিল দেবেন্দ্র ফড়নবীশ (Devendra Fadnavis), একনাথ শিন্ডে (CM Eknath Shinde) ও অজিত পাওয়াররা (Ajit Pawar)। কার্যত অন্য দল ভাঙিয়ে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধি করেছিল এনডিএ শিবির। ফলে এই নির্বাচনে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা, কংগ্রেস ও শরদ পাওয়ারের এনসিপির কাছে শক্তি প্রমাণ করার জন্য ছিল যোগ্য সময়।

কিন্তু তা আর হল কই। এই দুই বছরের মধ্যেই শিন্ডে-ফড়নবীশ-পাওয়ার জুটি এমন রাজ্য চালালো যে সমস্ত খেলা বদলে গেল মহারাষ্ট্রে। যেখানে বুথফেরত সমীক্ষাগুলিকে কার্যত মিথ্যা প্রমাণ করে বড়সড় জয় পেয়ে আবারও মহারাষ্ট্রের ক্ষমতার অলিন্দে বসতে চলেছে মহাযুতি। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩৫টিরও বেশি আসনে জয় পেতে চলেছে মহাযুতি। যার মধ্যে বিজেপি ইতিমধ্যেই জিতে গিয়েছে ৯২টি আসনে, এগিয়ে রয়েছে আরও ৪১টি আসনে। শিবসেনা (শিন্ডে) ৫৭টি আসনের মধ্যে ৪৩টিতে জয় পেয়েছে এবং ১৩টিতে এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে এনসিপি (অজিত পাওয়ার) ৪১-এর মধ্যে ৩৫টি আসনে জয় পেয়ে গিয়েছে। আর মাত্র কয়েক রাউন্ডের গণনা বাকি রয়েছে। তবে এই আসনগুলিতে অনেক ভোটেই এগিয়ে রয়েছে। ফলে খুব একটা উপর নিচ হবে বলে মনে হচ্ছে না।

অন্যদিকে বিরোধীদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। শিবসেনা (উদ্ধব) মাত্র ১৭টি আসনে জিতেছে। এগিয়ে রয়েছে ৩টি আসনে। কংগ্রেস জিতেছে ১০টিতে এবং এগিয়ে রয়েছে মাত্র ৫টি আসনে। এছাড়া শরদ পাওয়ারের নেতৃতাধীন এনসিপি মাত্র ৮টি আসনে জয় পেয়েছে, এবং ২টিতে এগিয়ে রয়েছে। এই জোটের পরাজয়ের মধ্যে সবথেকে বেশি নাস্তানাবুদ হয়েছে ঠাকরে পরিবার। যে পরিবারের একসময়ের কর্তা বালাসাহেব ঠাকরে মারাঠাভূমে শিবসেনা তৈরি করেছিলেন। সেই ঠাকরে পরিবারের হাতে আর দলের ব্যাটনই রইল না। উদ্ধব ঠাকরে, রাজ ঠাকরের ছেলে অমিত ঠাকরে সকলেই হেরেছে। একমাত্র ওরলি বিধানসভা থেকে উদ্ধবপুত্র আদিত্য ঠাকরে জিতে পরিবারের সম্মানরক্ষা করতে পেরেছে।