নয়াদিল্লি: আজ পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস। প্রতি বছর ২৯ আগস্ট এই দিবসটি পালিত হয়, যার উদ্দেশ্য হল পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করা। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিস্ফোরণ বা অন্য কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবসের (International Day Against Nuclear Tests ) বিশেষ উদ্দেশ্য। ১৯৪৫ সালে, জাপানের নাগাসাকি এবং হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার পর, বিশ্বের শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিটি দেশের এই পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আয়োজিত আন্তর্জাতিক দিবসে অংশগ্রহণ করা উচিত। আসুন জেনে নেই এই দিনটির সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য।
পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবসের ইতিহাস
জাতিসংঘের ৬৪তম সাধারণ অধিবেশন চলাকালীন, 2 ডিসেম্বর ২০০৯-এ পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব পাস হয়। সাধারণ পরিষদ এই দিনের জন্য ২৯ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছিল। এরপর প্রতি বছর ২৯ আগস্ট ২০১০ থেকে সারা বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। আরও পড়ুন : HC On Calling a Woman ‘Gandi Aurat’: ‘গন্দি অউরত’ বললে মহিলার অবমাননা নয়, বলল আদালত
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ২০০০টির বেশি পারমাণবিক পরীক্ষা বিস্ফোরণ করা হয়েছে। এই পরীক্ষাগুলি ক্যান্সার এবং তেজস্ক্রিয় কণার দ্রুত বিস্তার ঘটায়। এ কারণে জল, বাতাস, মাটি সবই বিষাক্ত হয়ে পড়ে। পারমাণবিক পরীক্ষার বিষয়ে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ২০১৯ সালে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, ‘সত্যকে অস্বীকার করা যায় না, পারমাণবিক পরীক্ষা বিশ্বকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।’
পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবসের তাৎপর্য
এই বিশেষ দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো জাতিসংঘ, সদস্য রাষ্ট্র, আন্তঃসরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং মিডিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করা। ১৯৪৫ সাল থেকে এপর্যন্ত ২০০০ টিরও বেশি এই ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে, যা পরিবেশ ও মানবজীবনের উপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলেছে। পরিস্থিতি যখন অত্যন্ত বিস্ফোরক হয়ে উঠল, তখন মানুষ এই ধরনের পরীক্ষার বিরুদ্ধে একটি বিশেষ দিবসের আয়োজন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, যাতে আরও বেশি মানুষকে এর থেকে উদ্ভূত বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা যায়। এই বিশেষ দিবসটি ঘোষণার পর, ২০১০ সালের মে মাসে, দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াই বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য নিজেদের সংকল্প করেছিল।
এই বিশেষ দিনটি কীভাবে উদযাপন করা হয়?
প্রতি বছর ২৯শে আগস্ট, জাতিসংঘ পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনে বিভিন্ন সেমিনার, সম্মেলন এবং বিতর্কের আয়োজন করে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে সম্মেলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও পথনাটকের আয়োজন করা হয়।