
আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধন। জগন্নাথ মন্দিরে বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করার কথা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Bandopadhyay)।গত কয়েকদিন ধরে মন্দিরের ভেতরে ও বাইরে চলেছে বিভিন্ন দেবদেবীর আরাধনা ও আম, বেলকাঠ ইত্যাদি দিয়ে সকাল ও সন্ধ্যা দুই বেলা চলেছে বিশ্ব শান্তিযজ্ঞ।মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন জগন্নাথ মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও, উপাচার শুরু হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগে থেকেই। পুরীর মন্দিরের রাজেশ দ্বৈতাপতির নেতৃত্বে শুরু হয়েছে শান্তিযজ্ঞ। রয়েছেন ইসকনের সহ-সভাপতি রাধারমণ দাসও। ইসকনের বিভিন্ন শাখার অন্তত ৬০ জন ভক্তও মাঙ্গলিক কাজে হাত লাগিয়েছেন।গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রায় এক কোটি মন্ত্রোচ্চারণের লক্ষ্যে মন্দিরের সামনে গড়ে ওঠা খড় ও হোগলার আচ্ছাদনের নীচে চারটি কুণ্ডের মাঝে মহাকুণ্ড জ্বালিয়ে চলছে মহামন্ত্র যজ্ঞ। নরসিংহ মন্ত্রে মুখরিত হয়ে চলেছে মন্দির প্রাঙ্গণ।
তবে প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে ২৯ এপ্রিল হবে বিশেষ হোমযজ্ঞ। রাত পেরোলেই সেই বিশেষ ক্ষণ, তাই তার আগে নিরাপত্তাবলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে সৈকতনগরীকে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর আজ বিকালেই দিঘা চলে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য প্রশাসনের বড় কর্তারা। তাই বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে গোটা দিঘা জুড়ে। নজরদারি শুরু হয়েছে দিঘা গেট এবং ওড়িশা সীমানাতেও।
প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে মহা যজ্ঞ পর্বঃ-
মঙ্গলবার বিভিন্ন পুণ্য ক্ষেত্রের জল দিয়ে শুরু হবে মহাযজ্ঞ। তাতে ইসকন এবং পুরীর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। মহাযজ্ঞের জন্য পেঁড়া, খাজা, গজা, রসগোল্লা ইত্যাদি মিষ্টি তৈরি হবে।যজ্ঞ শেষে সন্ধে নাগাদ ফুলে সাজানো বিছানায় শোয়ানো হবে জগন্নাথ দেবকে। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে জগন্নাথদেবের বসার পিঁড়ির পুজো। দুগ্ধস্নান সম্পন্ন হয়েছে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা এবং সুদর্শনের। লক্ষ্মী, বিমলা, সত্যভামা-সহ সমস্ত দেবদেবীর মূর্তিকেও দুগ্ধস্নান করানো হয়েছে। দিঘা জুড়ে মাইকে বাজছে মাঙ্গলিক সানাইয়ের সুর।
কীভাবে হবে জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা?
ইসকনের সহ-সভাপতি তথা সদ্য নির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য় রাধারমণ দাস (ISCON Vice President Radha Raman Das) জানিয়েছেন মন্দিরের অন্দরে কাঠের যে জগন্নাথ দেব রয়েছেন, তাঁর প্রাণপ্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পুরী থেকে আগত দ্বৈতাপতি পান্ডাদের কাঁধে। অন্যদিকে, পাথরের যে জগন্নাথ দেব ও রাধা-কৃষ্ণ বিগ্রহ রয়েছে, সেটিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবে ইসকন।মূল তিনটি পর্যায়ে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথমে ভগবানকে সোনা, রুপো ও তামার তার দিয়ে বেঁধে সেই তারকে প্রধান পুরোহিতের কোমড়ে বাঁধা হয়।এরপর তিনটি ধাপে সম্পন্ন হবে গোটা প্রক্রিয়া। প্রথমে ঘট স্থাপন, তারপর কুণ্ড ও অবশেষে প্রতিবিম্ব।’ পুরী-সহ দেশের একাধিক জায়গায় রথযাত্রার নিয়ম একটা, জগন্নাথ দেবের স্নানের পর দিন ১৪ তিনি ঘরবন্দি থাকেন। রাধারমণ দাস জানাচ্ছেন, সেই চিরাচরিত নিয়ম বাদ পড়বে না দিঘাতেও।