মস্কো, ১৫ আগস্ট: কথায় বলে না “রাখে হরি মারে কে”, তেমনটাই ঘটল রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর অদূরে রামেনেস্ক নামের এক জায়গায়। মরতে মরতে বেঁচে গেল রাশিয়ার যাত্রীবাহী বিমানের সব যাত্রীরা (Russian passenger plane)। সেখানেই রয়েছে আদিগন্ত ভুট্টা ক্ষেত, আর সেই ক্ষেতেই ২৩৩জন যাত্রী সমেত বিমান অবতরণ করালেন পাইলট। জরুরি অবতরণ (emergency landing) না করাতে পারলে নিশ্চিত মৃত্যু কোনওভাবেই এড়ানো যেত না। বিমানটি সিমফারপোল বিমানবন্দ থেকে ক্রাইমিয়ার উদ্দেশ্যে উড়েছিল। তবে পথেই এক ঝাঁক সিগালের ধাক্কায় বিমানের ইঞ্জিন পুরোপুরি বিগড়ে যায়। বিকল ইঞ্জিন নিয়ে যে এক কিলোমিটার দূরের জুকোভস্কি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ( Zhukovsky International Airport,) নাম যাবে না তা ভালই বুঝেছিলেন পাইলট। তাই রামেনেস্কের ভুট্টাক্ষেতেই নামালেন বিমান। প্রাণে বাঁচল ২৩৩জন যাত্রী। হিরোর খেতাব পেলেন পাইলট দামির ইউসপভ। আরও পড়ুন-খুব বেশি দিন উন্নয়নশীল দেশের সুবিধা নয়, ভারত-চিনকে হুমকি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
এই ঘটনায়ে পাইলটের কৃতিত্বে খুশি গোটা রাশিয়া। সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট বিমানটি উরাল এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস ৩২১। এটি ওড়ার কিছুক্ষণ পরে একঝাঁক সিগালের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তারপর মস্কোর দক্ষিণ-পূর্বে ভুট্টা ক্ষেতে অবতরণ করে। ২৩ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে কেউ মারা যাননি। রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশনে এই ঘটনাকে বলা হচ্ছে ‘মির্যাকল ওভার রামেনেস্ক’। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ধ্বংস হওয়ার পর থেকেই বার বার রাশিয়ার বিমানের নিরাপত্তা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়েছে। সেখানে এই বিকল ইঞ্জিনের বিমানটিকে অতি দক্ষতার সঙ্গে ভুট্টা ক্ষেতে নামিয়েছেন দামির ইউসপভ। এটি সত্যিই মিরাক্যল ঘটনা।
বিমানের যাত্রীদের তরফে জানা গিয়েছে, রানওয়ে ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্লেনটিতে ভয়ংকর ঝাঁকুনি শুরু হয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্লেনের ডানদিকের আলোগুলি নিভে যেতে থাকে। চারদিক পোড়া গন্ধে ভরে যায়। এই ঘটনা পরম্পরায় আতঙ্ক ছেয়ে যায় বিমানের ভিতরে। যাত্রীরা ভয়ে চেঁচামেচি আর্তান শুরু করেন। গোটা ঘটনায় বেশ কয়েকজন যাত্রী আঘাতও পান। তবে কারোর অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়। অবতরণের পর দেখা যায় ২৩৩ জনের মধ্যে ২৩জন যাত্রীর শারীরিক আঘাত রয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত কিছুটা বেশি, তবে হাসপাতালের ডাক্তারবাবুদের তত্ত্বাবধানে থাকলে তাঁর সুস্থতা শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। দামির ইউসপভ যে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে সকলকে ফিরিয়ে এনেছেন, তানিয়ে সংশয় নেই রাশিয়ার প্রশাসন বা সংবাদ মাধ্যমের।