শিবসেনার বিধায়কদের ভেঙে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন এক বছর আগে। বিজেপির সাহায্য নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরেকে। সে দিন একনাথ শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামীদের সেই পদক্ষেপ ‘দলত্যাগ বিরোধী কার্যকলাপ’ ছিল কি না, বৃহস্পতিবার সেই রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট।
দলত্যাগ বিরোধী আইনে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-সহ ১৬ জন ‘বিদ্রোহী’ শিবসেনা বিধায়কের পদ খারিজ করল না সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শিবসেনার দখল পাওয়ার পরে শিন্ডে গোষ্ঠীর ‘চিফ হুইপ’ উদ্ধব ঠাকরের অনুগামী বিধায়কদের যে ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন, বুধবার তাকেও ‘অসাংবিধানিক’ বলল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কদের পদক্ষেপকে ‘দলত্যাগ বিরোধী’ বললে তাঁরা পদ হারাতে পারতেন। সে ক্ষেত্রে উজ্জ্বল হত উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন ‘মহা বিকাশ আঘাডী’ জোটের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা। কিন্তু উদ্ধব শিবিরের সেই আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, গত জুনে শিন্ডে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের সময় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার (তথা ভারপ্রাপ্ত স্পিকার) নরহরি সীতারাম জিরওয়াল দলত্যাগী বিধায়কদের অবস্থান স্পষ্ট করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা তাঁর এক্তিয়ার-বহির্ভূত।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধবকে পুনর্বহালের আর্জি সরাসরি খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। সাংবিধানিক বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘বিধানসভায় আস্থা ভোটের আগে উদ্ধব নিজেই ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে আবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ফেরানো সম্ভব নয়।’’ উদ্ধবের ইস্তফার পরে রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি মহারাষ্ট্র বিধানসভার বৃহত্তম দল বিজেপির সমর্থিত শিন্ডেকে সরকার গড়তে ডেকে ‘অযৌক্তিক কিছু করেননি’ বলেও জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
২০২২ সালের জুন মাসে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। শিবসেনা দলের ভিতরের বিদ্রোহ হঠাৎই প্রকাশ্যে চলে আসে। বিদ্রোহী ৪০ জন বিধায়কদের নিয়ে উদয়পুরের রিসর্টে আশ্রয় নেন একনাথ শিন্ডে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেখানে প্রতিনিধি পাঠাতেই বিদ্রোহী বিধায়কদের রাতারাতি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অসমের একটি রিসর্টে। গোটা প্রক্রিয়ায় একনাথ শিন্ডেকে সাহায্য করেছিল বিজেপি। এক সপ্তাহের টানাপোড়েন পর বিধায়ক সংখ্যায় সংখ্য়াগরিষ্ঠতার জোরে মহা বিকাশ আগাড়ি জোটের পতন ঘটায় বিজেপি-শিন্ডে জোট। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন উদ্ধব ঠাকরে। পরেরদিনই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠন করেন একনাথ শিন্ডে। তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। উপমুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস।