অযোধ্যা মামলার আগে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত (Photo Credit: ANI)

লখনউ, ৮ নভেম্বর: অযোধ্যার বিতর্কিত জমি (Ayodhya land case) মামলার সম্ভাব্য রায় যে কোনও দিন। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে আগামীকালও রায় ঘোষণা করতে পারেন। রায়ের আগে ও পড়ে যে কোনওরকম অশান্তি রুখতে অযোধ্যা-সহ সমগ্র উত্তরপ্রদেশকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়েয়ারপরনাই তৎপর উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। অযোধ্যার নয়াঘাট, নাগেশ্বররাজ, রাম কি পাইধি, হনুমানকূপ রোড-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে ড্রোনের নজরদারি। জানা গিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA) প্রায় চার হাজার আধাসেনাকে উত্তরপ্রদেশে বিশেষত অযোধ্যার নিরাপত্তার জন্য নিয়োগ করেছে। এই রায়কে কেন্দ্র করে যাতে অশান্তি না ছড়ায় তাই অযোধ্যা জেলায় আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) বলেছেন, এই কারণে সবসমময় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দুটি হেলিকপ্টার তৈরি রাখা হয়েছে। একটি এই মুহূর্তে রয়েছে লখনউতে, (Lucknow) অন্যটি অযোধ্যায়। এদিকে অযোধ্যা মামলার রায় দেওয়ার আগে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠককরবেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব ও পুলিশ প্রধানকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছেন বিচারপতি গগৈ। মূলত রাজ্যের নিরাপত্তার বন্দোবস্তের হালহকিকত জানতেই এই বৈঠক। আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর নেবেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ (CJI Ranjan Gagoi) । তার আগে ছ’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় শোনাবেন তিনি। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অযোধ্যা মামলার রায়। মন্দির-মসজিদ মামলায় রায় বেরোনর পরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য ইতিমধ্যেই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। অযোধ্যায় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য চার দফা পরিকল্পনা করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের কর্তারা মনে করেন, একটি পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে অপরটি কাজে লাগানো যাবে। আপাতত শহরে ১২ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সেখানে পাঠানো হবে আধা সেনা ও প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি। আরও পড়ুন-Ayodhya Verdict: আসন্ন অযোধ্যা মামলার রায়, এই প্রথম পাথর খোদাইয়ের কাজ বন্ধ করল বিশ্বহিন্দু পরিষদ

উল্লেখ্য, ২.২৭ একর জমিতে মন্দির ছিল না মসজিদ ছিল তাই নিয়ে বিতর্ক। অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে ষোড়শ শতকে বাবরি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর তার কাঠামোটি গুঁড়িয়ে দেয় হিন্দুত্ববাদীরা। সেই জায়গায় তারা রামমন্দির নির্মাণের দাবি তোলে। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয়, বিতর্কিত জমির দুই-তৃতীয়াংশ হিন্দুদের এবং এক-তৃতীয়াংশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের। হিন্দু ও মুসলিমদের দু’পক্ষের সংগঠনই এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। তারপর ন’বছর ধরে শীর্ষ আদালতে চলেছে এই মামলা। গত ৬ আগস্ট থেকে টানা ৪০ দিন চলেছে অযোধ্যা মামলার শুনানি। এই শুনানির মধ্যেই নানান ঘটনা দেখেছে প্রধান বিচারপতির এজলাস। এবার সমাগত চূড়ান্ত রায়ের মাহেন্দ্রক্ষণ।