রাজা রামমোহন রায় (Picture Credits: Wikimedia Commons)

আজ বাংলা নবজাগরণের (Bengal Renaissance) পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়ের জন্মদিন (Raja Ram Mohan Roy Birth Anniversary)। তাঁর পথ প্রদর্শনে বাংলা তথা সমগ্র ভারত পেয়েছে এক কুসংস্কারমুক্ত সমাজ। ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ বা আধুনিক ভারতের জনক বলেও তাঁকে অভিহিত করা হয়। কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা এবং অশিক্ষার অন্ধকার দূর করে আধুনিকতার পথ প্রদর্শন করেন তিনি। তাঁর প্রয়াসেই সতীদাহ প্রথার মতো ঘৃণ্য প্রথার অবসান হয়। ২২ মে, ১৭৭২ সালে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রামমোহন রায়।

'বেদান্ত গ্রন্থ' প্রকাশের সঙ্গে তিনি ব্রহ্মনিষ্ঠ একেশ্বর উপাসনার পথ দেখালেন আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠা করে। এই আত্মীয় সভাকেই পরে তিনি ব্রাহ্মসমাজ নাম ও রূপ দেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মূর্তি পূজার তীব্র বিরোধী ছিলেন তিনি। সাহেবদের বাংলা শেখানোর জন্য তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে ব্যাকরণ রচনা করেন। রামমোহন রায় কলকাতায় ২০ অগস্ট, ১৮২৮ সালে ইংল্যান্ড যাত্রার আগে দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এই ব্রাহ্মসমাজ এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পুরোধা হিসাবে কাজ করেন।

সহমরণ-রীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টিতে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পূর্ণ সহায়তা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হিন্দু ধর্মের গোঁড়ারা এরপরও চেষ্টা করতে লাগেন পার্লামেন্টে বিষয়টি পুনর্বিবেচিত করতে। তিনি বিলেত গিয়ে এ মামলার মীমাংসা করতেও তৈরি ছিলেন। এব্যাপারে তাকে আর্থিক সহায়তা দান করেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। মোঘল সম্রাট ২য় আকবর তাঁর দাবি ব্রিটিশ সরকারের কাছে পেশ করার জন্য ১৮৩০ সালে রামমোহনকে বিলেত পাঠান, তিনি রামমোহনকে 'রাজা' উপাধি দেন।

এভাবেই আগাগোড়া হিন্দু ধর্মের যাবতীয় কুসংস্কার, ঘৃণ্য নিয়ম রীতির বিরুদ্ধে লড়ে বাংলা ও বাঙালির অহংকার ও গর্ব হয়ে উঠেছেন তিনি।