Indian Crowd in Ahmedabad (Photo Credit: Johns./ X)

India Census: দীর্ঘ ১৬ বছর পর ভারতে হতে চলেছে দেশের জনগণনা (Census 2027) বা জনশুমারির কাজ। ২০২১ সালে হওয়ার কথা থাকলেও কোভিডের কারণে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। এবার ২০২৭ সালে হবে ভারতের ১৬তম জনশুমারি। জনশুমারির পর দেশের জনসংখ্যা, সাক্ষরতা, লিঙ্গ অনুপাত এবং শহর-গ্রাম বিভাজনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশিত হবে। যার দেশের বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন হবে। এটি হতে চলেছে ভারতের প্রথম সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনগণনা। এবারের জনগণনায় আর হাতে লেখা নয়, তথ্য সংগ্রহ  ও সংরক্ষণে ব্যবহার করা হবে GPS ট্যাগিং, রিয়েল-টাইম ড্যাশবোর্ড এবং কোড-ভিত্তিক উত্তর।

দেশের ৩০ লক্ষ স্কুল শিক্ষক গণনার প্রাথমিক কাজটি করবেন

দেশের প্রায় ৩০ লক্ষ গণনাকারী (প্রধানত স্কুল শিক্ষকরা) জনগণনার কাজ করবেন। জেলাস্তরে জনগণনার কাজে যুক্ত থাকবেন ১ লক্ষ ২০ হাজার সরকারী আধিকারিক। ৪৬ হাজার প্রশিক্ষণ কর্মী জনগণনার কাজের জন্য গণনাকারীদের উপযুক্ত করে তুলবেন। ৯০ বছরে এই প্রথম পুরো জনগণনাই হবে ডিজিটাল। গণনাকারীরা সব নথি বা ডেটাই সরাসরি জনগণনা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপে সব কিছু নথিভুক্ত করবেন। ৬ মাস লাগবে জনগণনা সংক্রান্ত তথ্য পেতে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে হওয়ায় এবার দেশের জনগণনায় অপেক্ষাকৃত কম সময় ও নির্ভুল হবে। আরও পড়ুন-করোনায় ভারতে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেল

২০২৭ সালের পয়লা মার্চ থেকে শুরু হবে জনগণনার কাজ

ইংরেজি, হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলগু, মালয়ালাম সহ মোট ১৬টি ভাষায় অ্যাপে জনগণনা সংক্রান্ত সব কিছু নথিভুক্ত হবে। আগামী ২০২৭ সালের পয়লা মার্চ থেকে দেশের বেশিরভাগ জায়গায় জনগণনার কাজ শুরু হবে। তবে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড সহ দেশের বিভিন্ন তুষার ঢাকা অঞ্চলগুলিতে জনগণমার কাজ শুরু হবে ২০২৬ সালের পয়লা অক্টোবর থেকে। এই কাজ দুটি পর্যায়ে করা হবে- গৃহ তালিকাভুক্তি এবং জনসংখ্যা গণনা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা হওয়ায় এতে ভুল কুলনায় অনেক কম থাকবে পরিবারের অবস্থান নির্ধারণে GPS ব্যবহার হবে। জনগণনা অ্যাপে নামের বানান ভুল, ভুল বয়স বা পরিবারের ভুল কাঠামো ধরা পড়ে যাবে। নতুন কোডিং সিস্টেম তথ্য সংগ্রহকে আরও নির্ভুল করবে।

রাজ্যগুলির লোকসভার আসন কমতে বা বাড়তে পারে এর ভিত্তিতে

এবার ভারতের সেনসাস বা জনশুমারিতে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকছে। দেশের পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই পোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য পূরণ করতে পারবে। স্ব-গণনার পর একটি ইউনিক আইডি তৈরি হবে। গণনা প্রক্রিয়া শেষ হলে অস্থায়ী তথ্য ১০ দিনের মধ্যে, চূড়ান্ত তথ্য ৬ মাসের মধ্যে প্রকাশিত হবে। জনগণনার তথ্য লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসে ব্যবহৃত হবে। দক্ষিণের রাজ্যগুলির দলেরা তাই লোকসভা আসন কমার আশঙ্কা করছে। দেশের ১৬ তম জনগণনার ভিত্তিতে বেশ কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হবে। সেগুলি হল- লোকসভার বিন্যাস, তফসিলি জাতি-উপজাতি সংরক্ষণ বা কোটা, রাজ্য, স্কুল, রেশন ও এই জাতীয় বিষয়ে তহবিল কতটা হবে। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামোখাতের পরিকল্পনার জন্য জনশুমারির তথ্য ব্যবহার করা হবে।

জনগণনাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কী কী প্রশ্ন করা হবে

সেনসাসের গৃহ-তালিকাভুক্তিতে যেসব প্রশ্ন থাকবে সেগুলি হল- কী ধরনের বাড়ি (সিমেন্ট না মাটি), শৌচাগার কটি, পানীয় জল কোথা থেকে পান, বিদ্যুত সংযোগ আছে কি না, ফোন কটি, টিভি কতগুলি আছে, বাড়িতে কটি যানবাহন আছে। আর জনগণনায় যে প্রশ্নগুলি থাকবে সেগুলি হল- নাম, বয়স, পেশা বা চাকরি, জাতি, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, শিক্ষা ও ধর্ম। জনগণনার কাজে ভারত সরকারের আনুমানিক মোট ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে।

২০১১ সালের জনগণনায় কী কী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল

২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ভারতের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১২১ কোটি। পুরুষদের সংখ্যা ছিল ৬২.৩২ কোটি (৫১.৫%) ও মহিলাদের ৫৮.৭৫ কোটি (৪৮.৫%)। প্রতি হাজার জন পুরুষে ৯৪৩ মহিলা ছিলেন। দেশে শহরের জনসংখ্যা ৩৭.৭১ কোটি (৩১.২%), সেখানে গ্রামীণ জনসংখ্যা ছিল ৮৩.৩৫ কোটি (৬৮.৮%)। ভারতের মোট পরিবার ছিল ২৪.৯৫ কোটি। গড় পরিবারের আকার ছিল ৪.৮ জন।