প্রতীকী ছবি(Photo Credit -pixabay)

লখনউ, ১ আগস্ট: উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডে বেশ বিপাকে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। বৃহস্পতিবার উন্নাও কাণ্ডের তদন্তে নিযুক্ত সিবিআই কর্তাদের রিপোর্ট পেশ করতে বলে সুপ্রিমকোর্ট। সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রের তরফের আইনজীবী মাহামান্য আদালতের থেকে আরও একদিন সময় চেয়ে নিয়ে জানান, এই তদন্তে নিযুক্ত সিবিআই কর্তারা দিল্লির বাইরে আছেন। তাই শুক্রবার পের শুনানি হলে ভাল হয়। যদিও প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে দিয়ে সাফ জানিয়েছে। সিবিআই কর্তারা আজই তদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করে আদালতে জানাবেন। এরপরেই বিধায়ককে বহিষ্কার করে বিজেপি। আরও পড়ুন-একরত্তিকে মায়ের বিছানা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ, নির্যাতিতার মুণ্ডু কাটল পাষণ্ডরা

উল্লেখ্য, উন্নাও-সহ চারটি গণধর্ষণ কাণ্ডের মামলা উত্তরপ্রদেশ থেকে সরে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হল। প্রধানবিচারপতির হস্তক্ষেপ টের পেয়েই আর দেরি করেনি বিজেপি। সাত তাড়াতাড়ি উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে দল থেকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ২৮ জুলাই রায়বেরিলিতে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ওই নির্যাতিতা। দুর্ঘটনায় তাঁর দুই আত্মীয়ের মৃত্যুও হয়। এই মুহূর্তে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন নির্যাতিতা তরুণী। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাঁর আইনজীবীও। অথচ, প্রাণের আশঙ্কা করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে আগেই চিঠি পাঠিয়েছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতার আত্মীয়রা। ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকেও। তাতে অভিযোগ করা হয়, অভিযুক্ত বিধায়কের অনুগামীরা নিয়মিত তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মামলাটি উত্তরপ্রদেশের বাইরে স্থানান্তর করা হোক। সেই চিঠি কেন প্রধান বিচারপতির হাতে পৌঁছায়নি তা সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

উল্লেখ্য, ২০১৭-তে উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের পর থেকে ঘটনার গতিপ্রকৃতি বার বার বদলেছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ধর্ষক বিধায়ক নানাবাবে নির্যাতিতার পরিবারকে বিপদে ফেলেছে। কখনও হুমকি দিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে বলেছে। কখনও খুনের হুমকি দিয়েছে। প্রাণনাশের আশঙ্কায় প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েও নিস্তার পেলেন না নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিা থেকে শুরু করে রাজনীতির উপর মহলদেশের বিশিষ্টজন চারিদিকের সমালোচনা রীতিমতো বিদ্ধ উত্তরপ্রদেশ সরকার শেষমেশ কুলদীপ সেঙ্গারকে ২ বছরের জন্য ছুটিতে পাঠিয়ে দিল। একই সঙ্গে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের উপরে হওয়া দুর্ঘটনার তদন্তের মামলা সাত দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।