
ফরিদাবাদ, ২১ জুনঃ শ্বশুরবাড়ির অদূরে পাকা কংক্রিটের রাস্তা খোদাই করে উদ্ধার হল পুত্রবধূর পচাগলা দেহ। আবাসিক রাস্তার ১০ ফুট গভীর খাদ থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার সকালে হরিয়ানার (Haryana) ফরিদাবাদে রোশন নগরে খননকারী যন্ত্র দিয়ে খোঁড়া হল রাস্তা। এরপরেই হতবাক এলাকাবাসী। পচাগলা মৃতদেহটি বছর ২৪-এর তনুর বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। মহিলার শ্বশুরবাড়ির চার সদস্য - স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং আরও একজন নিকটাত্মীয়কে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
২০২৩ সালে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) শিকোহাবাদের বাসিন্দা তনুর সঙ্গে বিবাহ হয় ফরিদাবাদের রোশন নগরের বাসিন্দা অরুণের। শ্বশুরবাড়ির ঠিক সামনেই পাকা রাস্তার নীচ থেকে কবর দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে মহিলার দেহ। মৃত্যুর সঠিক সময় এবং কারণ নির্ধারণের জন্য ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে দেহ। এদিকে প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রায় দুই মাস আগে বর্জ্য জলের জন্য ড্রেন তৈরি করতে রাস্তার ওই অংশটি খনন করা হয়েছিল।
তনুর বোন প্রীতি পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে তাঁর বোনের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হত। অরুণ এবং তাঁর বাবা-মা বিয়ের পরপরই সোনার গয়না এবং টাকা দাবি করেছিলেন। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সেই দাবি পূরণে তনুর পরিবার যথাসম্ভব চেষ্টা করে। কিন্তু তাও বারবার চাপ দেওয়া হয়েছিল। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কয়েক মাস পরেই নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন তনু। এক বছরের বেশি সময়ে বাপের বাড়িতেই ছিলেন তিনি। পরে তাঁকে আবার শ্বশুরবাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। আবারও শুরু হয় অত্যাচার। এমনকি এবার আর তনুর সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি তাঁর পরিবারের।
প্রীতি আরও অভিযোগ করেন, ৯ই এপ্রিল থেকে তনুর সঙ্গে ফোনে সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন হয় তাঁদের। ২৩শে এপ্রিল শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পরিবারকে জানায় তনু বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে জানান, এপ্রিল মাসেই তনুর শ্বশুর বাড়ির ড্রেন নিকাশি ব্যবস্থার জন্যে গর্তটি গর্তটি খনন করিয়েছিলেন। রাতারাতি সেই গর্ত ঢেকেও দেওয়া হয়। একটি সিমেন্টের স্ল্যাবও বিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গর্তের নীচে যে মৃতদেহ পুঁতে রাখা হয়েছে তা কল্পনাও করতে পারেননি এলাকার কেউ।