
দিল্লি, ২২ মে: হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট (Hair Transplant) বা চুল প্রতিস্থাপন। সৌন্দর্য ধরে রাখতে বর্তনমানে যেমন অনেকে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি বা বোটক্সের সাহায্যে নেন, এই হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টও তেমনই একটি। তবে চুল প্রতিস্থাপন করাতে গিয়ে মানুষ যে কোথা থেকে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন, তা টের পাচ্ছেন না ঘুনাক্ষরেও। এবার এমনই একটি ঘটনা ঘটে গেল কেরলের (Kerala) এক ব্যক্তির সঙ্গে।
রিপোর্টে প্রকাশ কোচির (Kochi) বাসিন্দা সি সুনীল নিজের হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছিলেন স্থানীয় একটি ক্লিনিক থেকে। দেখতে ভাল লাগবে, সেই ধারনা থেকেই সুনীল চুল প্রতিস্থাপন করান। হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পর কিছুদিন ভাল কাটলেও হঠাৎ করে অসুস্থ হতে শুরু করে সুনীল। মাথায় ব্যাথা শুরু হয় তাঁর। মাথায় ব্যাথা শুরু হলে সুনীল চিকিৎসকের কাছে যান। সবকিছু শুনে চিকিৎসক তাঁকে ব্যাথা কমানোর ওষুধ এবং স্টেরয়েড দেন। পরপর পেনকিলার এবং স্টেরয়েড খেয়েও উপকার পাননি সুনীল। ফলে তিনি দ্বিতীয় চিকিৎসকের কাছে যান।
সুনীল সমস্যা শুনে বেশ কয়েকটি পরীক্ষানীরিক্ষ করান ওই চিকিৎসক। জানা যায়, হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে সুনীল নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছেন। চুল প্রতিস্থাপন করাতে গিয়ে সুনীলের মাথায় বাসা বেঁধেছে এক ধরনের মাংস-খেকো ব্যাকটেরিয়া (Flesh-Eating Bacteria)। সেই ব্যাকটেরিয়ার দাপট যত বাড়তে শুরু করে, সুনীলের শরীর তত খারাপ হতে শুরু করে। মাথার যন্ত্রণাও বৃদ্ধি পায় ততধিক।
মাংস-খেকো ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়তে সুনীল পরপর ১৩টি অস্ত্রোপচার করান। মাথার চামড়ার প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে একের পর এক অস্ত্রোপচার হয় সুনীলের। বর্তমানে কিছুটা ভাল আছেন তিনি। তবে আরও একটি বা দুটি অস্ত্রপচার করালে তবেই সুনীল সরে উঠতে পারেন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পর সুনীল যখন একের পর এক অস্ত্রোপচার করাচ্ছেন শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য। ফলে জীবন যেন বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে সুনীলের কাছে।
মাংস-খেকো এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে কীভাবে বুঝবেন, কোন কোন উপসর্গ দেখা দেবে চোখ বুলিয়ে নিন...
পুঁজ ভর্তি ফোড়া তৈরি হবে মাথায়। এরপর পুঁজ ভর্তি ফোড়া থেকে পুঁজ বের হবে ক্রমাগত।শরীর লাল হয়ে যাবে কিংবা বিবর্ণতা চোখে পড়বে।মাথা থেকে শরীর সব ফুলতে শুরু করবে। মাথায় অসম্ভব ব্যথা অনুভূত হবে। চুলকুনি শুরু হবে মাথায়। জ্বালা করবে মাথা।রক্তপাতও হতে পারে। জ্বর হবে। তাপমাত্রাও বাড়বে ক্রমাগত। শরীরে অলসতা এবং ক্লান্তি বৃদ্ধি পাবে। মানুষ-খেকো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে ফুলে যেতে শুরু করবে শরীর। সব সময় বমি বমি ভাব দেখা দেবে। সময়, অসময়ে বমি শুরুও হবে।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পর সংক্রমণ বা ইনফেকশন হলে কী করবেন
ভাল কোনও মেডিকেল লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্লিনিকে যান। ভাল চিকিৎসককে দেখান।
মাথার ক্ষত স্পর্শ করবেন না।
পরপর প্রয়োজনমত অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করবেন না।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের আগের এবং পরের সমস্ত নিয়ম মেনে চলুন।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পর সংক্রমণ হলে যখন সেরে উঠছেন, সেই সময় মদ্যপান করবেন না। ধূমপান করবেন না।