
পুলিশ নিয়ে দেশের একাংশ মানুষের মনে একটা মিশ্র ভাবমূর্তি রয়েছে। অনেকের মতেই, পুলিশ শুধুই অপরাধী ধরে বেরায় এবং তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়, প্রয়োজনে বন্দুকেরও ব্যবহার করে। আবার অনেকের কাছে একাধিক নেতিবাচক উদাহরণও রয়েছে। তবে এবার উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা (Gonda) থানার পুলিশকে এক অন্য রূপ দেখা গেল। অভিভাবকহীন এক পরিবারের একমাত্র মেয়ের বিয়ের সমস্ত দায়িত্ব তুলে নিল থানারই পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীরা। আসলে ওই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষ সম্প্রতি ডাকাত দলের হামলায় মৃত্যু হয়েছে। ছিনতাই হয়েছে সমস্ত গয়না ও টাকা পয়সা। সেই বাড়ির মেয়ের বিয়ে দেওয়ালেন স্থানীয় থানা পুলিশ।
ডাকাতের হামলায় মৃত্যু হয় মেয়েটির দাদার
জানা যাচ্ছে, পরিবারের একমাত্র উপার্জিত ব্যক্তি ছিলেন মেয়েটির দাদা। বাবার দীর্ঘদিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল। যার ফলে তাঁকে এবং তাঁর মাকে দেখাশোনা করতেন ওই দাদা। বোনের বিয়ে বলে আগে থেকেই গয়না বানিয়ে টাকা পয়সা জমাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু মাস দেড়েক আগে আচমকাই তাঁদের বাড়িতে ডাকাত পড়ে। সর্বস্ব লুট করে পালাতে যাওয়ার সময় বাধা দেয় মেয়েটির দাদা। তখন তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
গ্রেফতার ডাকাতরা
এদিকে মেয়েটির বিয়ে ততদিনে ঠিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষ তো চলে গেছেই, সেই সঙ্গে টাকাপয়সা, গয়না সব লুট হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে ডাকাতির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এবং ৬ জনের ডাকাত দলের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতারও করে তাঁরা। তবে দুজনের মৃত্যু এনকাউন্টারে হয়। যদিও উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র অনেকটাই পুলিশ পরিবারের হাতে তুলে দেয়। তবে অধিকাংশ জিনিসই ডাকাতরা হয় খরচ করে ফেলেছে নয়তো বা পাচার করে দিয়েছে।
পরিবারের দায়িত্ব নিল পুলিশ
এই অবস্থায় শুক্রবার মেয়েটির বিয়ের খরচ নিজেদের কাঁধে তুলে নিল থানার পুলিশ। এমনকী অভিভাবকহীন মেয়েটির বিয়ের সব দায়দায়িত্ব সামলালেন তাঁরা। মেয়েটিকে সাজালেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। এমনকী গ্রামের প্রধান, স্থানীয় বাসিন্দারাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মেয়েটির বিয়ে হল। এমনকী মেয়েটি বিয়ে করে চলে যাওয়ার পর তাঁর বৃদ্ধ মায়ের দেখাশোনার দায়িত্ব নিলেন পুলিশ আধিকারিকরা।