Prajwal Revanna Life Imprisonment যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হল ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না-কে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে বসে ভোটে জিততে প্রচার করেছিলেন, আর এখন আজীবন জেলে কাটাতে হবে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়ার (H. D. Deve Gowda) রাজনীতিবিদ নাতিকে। ৪৮ বছরের এক মহিলাকে যৌন হেনস্থা কাণ্ডে গতকাল, শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন জেডি (এস)-এর হাসান কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না। বেঙ্গালুরুর এক আদালত এই মামলায় দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়ার নাতিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল।
আদালতে কেঁদে ফেলেন রেভান্না
সাজা শোনার আগে বিচারকের কাছে হাতজোড় করে কম সাজা দিতে বলেছিলেন গত বছর লোকসভায় কর্ণাটকের হাসানে এনডিএ-র পরাজিত প্রার্থী। হাউহাউ করে কাঁদছিলেন তিনি। কিন্তু ডিএন প্রমাণ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ, বিভিন্ন বয়ানে প্রমাণ হয়েছে প্রজল্লা রেভান্না ৪৮ বছরের পরিচারিকার যৌন নির্যাতন করেছেন। আর তাই জনতা দল ইউনাইটেডের প্রাক্তন তরুণ সাংসদের বড় সাজা নিশ্চিত ছিল। এখনও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের তিনটি মামলা চলছে। এবার সেগুলির শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
এই মামলায় আইনজীবীদের বক্তব্য
মামলাকারীর আইনজীবী এইচ.কে জগদীশ জানিয়েছেন, “আদালত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পরীক্ষা করে দেখেছে। যার সঙ্গে ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক প্রমাণ, ভুক্তোভোগীর বক্তব্যও রয়েছে। এই মামলায় মোট ২৬ জনের বক্তব্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ১৮০টি তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সবকিছুর ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত”।
পরিচারিকাকে ধর্ষণ কাণ্ডটি
কর্ণাটকের হাসানের গান্নিকাদা গেস্ট হাউসে পরিচারিকার কাজ করা ৪৮ বছরের এক মহিলাকে যৌন হেনস্থা, তারপর তার ভিডিও করার অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন সাংসদ রেভান্নার বিরুদ্ধে। সেই মামলায় বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালতের বিচারপতি সন্তোষ গাজানন হাসানের প্রাক্তন সাংসদ রেভান্নাকে দোষী বলে ঘোষণা করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনালেন। প্রজ্জ্বল রেভান্না একাধিক মহিলাকে জোর করে যৌনতায় যেতে বাধ্য করতেন এবং তার ভিডিও করে রাখতেন। সেই রকম বহু অভিযোগের পর মধ্য়ে প্রথমটিতে দোষী হলেন হাসানের প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্না। যিনি গত বছর বিজেপির সমর্থনে এনডিএ প্রার্থী হয়ে হাসান থেকে হেরে গিয়েছিলেন।
আরও ৩টি ধর্ষণের মামলা চলছে রেভান্নার বিরুদ্ধে
গত বছর লোকসভা নির্বাচনের মুখে রেভান্নার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল ৪টি মামলা। যার মধ্যে একাধিক মহিলাকে ধর্ষণ, যৌন হেনস্থা, ব্ল্যাকমেল সহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তে উদ্ধার হয়েছিল অসংখ্য চাঞ্চল্যকর ভিডিয়ো ক্লিপ। দীর্ঘদিন ধরেই হাসান জেলার হোলেনারসিপুরার একটি ফার্মহাউসে এই কুকীর্তি চালাত প্রজ্জ্বল।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক প্রজ্জ্বল রেভান্না কাণ্ড ও এনডিএর প্রাক্তন সাংসদের কুকীর্তি:
১. প্রধান অভিযোগ ও মামলা
মামলা সংক্রান্ত সারাংশ:
মামলা সংখ্যা: প্রজ্জ্বল রেভান্নার বিরুদ্ধে মোট ৪টি ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে
প্রথম অভিযোগ: ৪৮ বছরের গৃহকর্মী এক মহিলার বিরুদ্ধে একাধিকবার যৌন নিগ্রহ ও ভিডিও রেকর্ড করার অভিযোগ।
২) অন্যান্য তিনটি ধর্ষণ মামলা:
আরও তিনটি মামলা তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন রয়েছে, যেগুলোতে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, এবং সম্ভাব্য ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ জড়িত। এই মামলাগুলোর বিস্তারিত তথ্য এখনও সামনে আসেনি। তবে মিডিয়ায় এই নিয়ে বেশ কিছু অসমর্থিত সূত্রের রিপোর্ট রয়েছে। বেঙ্গালুরু পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল- সিট এই বিষয়ে তদন্ত করছে।
৩) প্রথম ধর্ষণের অভিযোগ কোথায় দায়ের হয়েছিল-
প্রজ্জ্বলের বিরুদ্ধে হাসান জেলার এক গ্রামীণ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ৪৮ বছরের সেই মহিলা। এটাই ছিল রেভান্নার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রথম ধর্ষণের অভিযোগ। এরপর একটার পর একটা ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা হতে শুরু করে জনতা দল সেকুলারের যুবনেতা তথা প্রাক্চন সাংসদ প্রজ্জ্বল রেভান্নার বিরুদ্ধে।