সুষমা স্বরাজ প্রয়াত। (Photo Credits: PTI)

দিল্লি, ৬ আগস্ট: প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আধঘণ্টা আগেই তাঁকে দিল্লির এইমসে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনে জিতে বিজেপি ক্ষমতায় এলেও শ্রীমতী স্বরাজকে কিন্তু দ্বিতীয় মোদি সরকারের মন্ত্রীসভায় দেখা যায়নি।

তিনি আগেভাগেই দায়িত্ব থেকে অবসর চেয়ে নিয়েছিলেন। এনিয়ে নানরকম গুঞ্জন উঠলেও তাতে পাত্তা দেননি। তবে শ্রীমতী স্বরাজ একা নন দ্বিতীয় মোদি সরকারের জমানায় মন্ত্রীত্বের দাবিদার হতে চাননি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। আরও পড়ুন-মৃত্যুর ঠিক আগে এটাই ছিল সুষমা স্বরাজের শেষ টুইট, আবেগঘন টুইটটা দেখলে মন খারাপ হয়ে যাবে

মনে আছে মুম্বইয়ের সেই তরুণ ইঞ্জিনিয়রের কথা যিনি বিয়ের পরেও ব্যাচেলর জীবনই কাটাতেন কেননা স্ত্রী রাজস্থানের  একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তিনি টুইটে  তদানীন্তন  বিদেশমন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছিলেন।

আর শ্রীমতী স্বরাজ তাঁর কথা তো আজ সকলেই মনে করবেন। কেন না দেশবাসীর টুইট দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াতে তাঁর জুড়ি কেউ ছিল না। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে বিভিন্ন সময় কাজ করতে যাওয়া ঠিকাশ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁকেই সবথেকে বেশি অগ্রণী ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। মরদেহ যাতে দ্রুত শোকস্তব্ধ পরিবারের হাতে পৌঁছায় সেটা তিনি ভালভাবে তদারকি করতেন। বিদেশ বিভুঁইয়ে বিপদে পড়া ভারতীয়র পাশে দাঁড়িয়েছেন সবসময়। মন্ত্রীত্বের প্রোটোকলের মধ্যে থেকেই তাঁর আত্মিক কর্মকাণ্ড দেশবাসী সবসময় মনে রাখবে। বিদেশমন্ত্রী হিসেবে জনমনে এমন জনপ্রিয়তা তাঁর মতো কেউই পাননি, এটা হলফ করে বলা যায়।

গত কয়েকবছর ধরে কিডনির অসুখ, হৃদযন্ত্রেগ গোলমাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জটিল শারীরিক অসুখে ভুগছিলেন তিনি। বছর খানেক আগে টানা দীর্ঘ সময় এইমসে চিকিৎসা চলেছে তাঁর। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিজের কাজ করে উঠতে পারেননি। ভারতীয় তরুণীকে ছলেবলে কৌশলে বিয়ে করে পাকিস্তানে আটকে রাখার খবরে যখন গোটা দেশ তরুণীকে দোষারোপ করছে। তখন নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বটগাছের মতো আশ্বাস দিয়েছিলেন শ্রীমতী স্বরাজ। তাঁর অবদান ভোলা সত্যিই অসম্ভব। সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থেকে জনপ্রিয় মন্ত্রী হওয়া যায় তা শ্রীমতী স্বরাজই দেখিয়ে গিয়েছে. তাঁর পথে হেঁটে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুও  টুইটারে রেলযাত্রীদের অভাব অভিযোগ শুনতেন।

মন্ত্রীত্ব ক্ষমতার অলিন্দ থেকে দূরে গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ার কাছেই রয়ে গিয়েছিলেন শ্রীমতী স্বরাজ। তাই  মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা  আগেও  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টুইট করেছেন তিনি।

ইতিমধ্য়েই শ্রীমতী স্বরাজের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্মৃতিচারণে তিনি বলেছেন, ৯০ সাল থেকে শ্রীমতী স্বরাজের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। পরস্পরের মতাদর্শ আলাদা হলেও মানুষ হিসেবে শ্রীমতী স্বরাজ যে  নমস্য সেটা মানতেই হবে। একসঙ্গে যে সংসদের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন তাও উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।