খুনের মামলা মূল অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে মহা সমস্যায় পড়লেন দুঁদে পুলিশ অফিসাররা। কারণ গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি যে মূক এবং বধির। আর সেই কারণে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও সঠিক উত্তর পাচ্ছিলেন না পুলিশ। এই কঠিন অবস্থায় সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন এক সহকর্মীর ছেলে। তিনিও জন্মগতভাবে শ্রবণশক্তি ও বাকশক্তি হারিয়েছিলেন এবং স্থানীয় একটি মূক ও বধিক স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর সাহায্যে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে কিনারা করা হল একটি খুনের মামলা।

ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৫ অগাস্ট মুম্বইয়ের দাদর স্টেশনে (Dadar Railway Station)। জানা যাচ্ছে, সেখানে একটি সন্দেহজনক ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার হয়ছিল। প্রথমে ব্যাগটি ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়ালেও পরে মুম্বই পুলিশ এসে ব্যাগটি উদ্ধার করে খুলে একটি দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক  তদন্তে জানা যায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যক্তির দেহটি বছর ৩০-এর আরশাদ আলি সিদ্দিকি আলি শেখের। এরপর দাদর রেল পুলিশ ও মুম্বই পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার জয় ছাওডা নামে ওই ব্যক্তি। সেই সঙ্গে আরশাদ আলির স্ত্রী সহ আরও একজন গ্রেফতার হয়। তদন্তে জানা যায় জয়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল মৃতের স্ত্রী-এর। আর সেই কারণেই পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় আরশাদকে।

তবে মূল অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ না করলে তৈরি হবে না চার্জশিট। যে কারণে জয়কে গ্রেফতার করার পর থেকেই চাপে পড়ে মুম্বই পুলিশ। সূত্র মারফত জানা যায় স্থানীয় সাধনা বিদ্যালয়তে মূক ও বধির শিশুদের পড়ানো হয়। তবে কোনও অভিভাবকই তাঁদের সন্তানদের এই ঘটনায় জড়াতে চাইছিলেন না। এরমধ্যেই তাঁরা জানতে পারেন আরএকে মার্গ পুলিশ স্টেশনের কনস্টেবল রাজেশ সাতপুতের ছেলে ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র।

তারপরেই তাঁরা সাতপুতের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে তাঁর বছর ২৩-এর ছেলে পুলিশকে সাহায্য করতে রাজি হয়েছে। এরপর রাত ২টো নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে প্রশ্নপত্র অনুযায়ী অপরাধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। তারপর সেইমতো প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকে অভিযুক্ত। রাতভর ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পুরো ঘটনা জানতে পারেন পুলিশ আধিকারিকরা। ঘটনার পর গৌরবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা।