আমেদাবাদ, ২৯ এপ্রিল: গুজরাটের সুরাটের (Surat) পর এবার মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর (Indore)। কংগ্রেস প্রার্থী না থাকায় দেশের আরও একটা লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির জয় নিশ্চিত হল। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষের ঠিক আগে ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালেন ইন্দোরের কংগ্রেস নেতা অক্ষয় কান্তি বাম (Akshay Kanti Bam)। অথচ ভোটে লড়ার জন্য তিনি নিজে কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে অনেক দরবার করেছিলেন। ইন্দোরে বিজেপির সবচেয়ে বড় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র গাড়িতে বসে কংগ্রেসের অক্ষর মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে গেলেন। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় কৈলাস বিজয়বর্গী শেয়ার করে জানালেন, ইন্দোরে কতটা সহজ হচ্ছে তাদের জয়। আর কৈলাসের গাড়ির পিছনে বসে সে কি হাসি অক্ষয় বামের।
সুরাটের মতই ইন্দোরও বিজেপি-র একেবারে মজবুত গড়। তবু গণতন্ত্রে নির্বাচন হওয়াটা একান্ত প্রয়োজনীয়। সুরাটে কংগ্রেসের দু'জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল। আর ইন্দোরে কংগ্রেস প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন। তবে দুটি ক্ষেত্রেই ইচ্ছাকৃত ওয়াকওভার, দলবদলের 'অশুভ আঁতাত' জিনিসটা কমন। সুরাটের মনোনয়ন বাতিল হওয়া কংগ্রেস প্রার্থী বিজেপি-তে যোগ দেবেন যে কোনও দিন। আর ইন্দোরের কংগ্রেস প্রার্থী বিজেপিতে যোগ দিলেন। দেশের ৫৪৩টি লোকসভা আসনে ভোট গণনার আগেই বিজেপি-র পক্ষে ২-০ হয়ে গেল।
গণতন্ত্রের পক্ষে এটা কতটা শুভ, কংগ্রেসের দৈনতা ঠিক কতটা, কিংবা বিজেপির ইলেকশান ম্য়ানেজমেন্ট ঠিক কতটা মজবুত এই বিতর্ক দূরে সরিয়ে রাখলে মোদ্দা কথাটা দাঁড়ায়, ইন্দোরবাসী বিরোধী রাজনীতির আঁচ পেলেন না। ঠিক যেমন সুরাটবাসী ভোট দেওয়ারও সুযোগ পেলেন না।
দেখুন ছবিতে
Congress candidate from Indore joins BJP today pic.twitter.com/Kh0t0DBcUe
— Padmaja Joshi (@PadmajaJoshi) April 29, 2024
ক মাস আগে কমননাথের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর রাজ্যে হাত শিবিরের অবস্থা কাহিল। অথচ একটা সময় মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-কে প্রায় ব্যাকফুটেই ঠেলে দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগের ধাক্কা কংগ্রেস আর কাটিয়ে উঠতে পারল না। ভোটে ভরাডুবির পর কমলনাথ নিজেই বিজেপি-র দিকে এক পা বাড়িয়ে ছিলেন। যে ইন্দোরে কংগ্রেস প্রার্থী ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালেন, সেটা খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারি-র এলাকা। এটাতেই পরিষ্কার মধ্যপ্রদেশে হাত শিবিরের দৈনতা ঠিক কতটা গভীর।
সুরাটের সঙ্গে ইন্দোরের দুটো ফারাক আছে। সুরাটে বিজেপি-র বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ছাড়া আর কোনও প্রার্থী না থাকায় সেখানে পদ্ম প্রার্থী মুকেশ দালাল-কে জয়ের শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। তবে ইন্দোরে কংগ্রেস প্রার্থী নাম প্রত্যাহার করলেও, বিএসপি-র প্রতীকে লড়বেন সঞ্জয় সোলাঙ্কি। বিজেপি-র সাংসদ শঙ্কর লালহানির বিরুদ্ধে বিএসপি-র সঞ্জয়ের লড়াইটা নেহাতই নিয়মরক্ষার হতে চলেছে। কারণ এই লোকসভা কেন্দ্রে বিএসপি-র মোট মাত্র হাজার দশেক।
সেখানে ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির শঙ্কর লালওয়ানি সাড়ে ১০ লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন। গতবার বিজেপির লালওয়ানি প্রায় ৫ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন কংগ্রেসের পঙ্কজ সাঙ্কভি-কে। এই ইন্দোর থেকে টানা আটবার সাংসদ ছিলেন বিজেপি নেতী সুমিত্রা মহাজন। ২০১৯ সালে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের পরিবর্তে লালওয়ানবি-কে দাঁড় করায় বিজেপি। শেষবার ইন্দোরে কংগ্রেস জিতেছিলেন সেই ১৯৮৪ লোকসভায়।