লখনউ, ২০ সেপ্টেম্বর: আইনের ছাত্রীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে অবশেষে প্তার উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা স্বামী চিন্ময়ানন্দ (Swami Chinmayanand)। শুক্রবার সকালে চিন্ময়ানন্দকে গ্রেপ্তার করে বিশেষ তদন্তকারী দল ও উত্তরপ্রদেশ। শাহজাহানপুরের মুমুকসু আশ্রম থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারির পর রুটিন চেকআপের জন্য চিন্ময়ানন্দকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার ধর্ষণে অভিযুক্ত বছর তিয়াত্তরের বিজেপি নেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিন্ময়ানন্দকে গ্রেপ্তার করা না হলে আত্মহত্যা করবেন, বৃহস্পতিবার এই হুমকি দেন নির্যাতিতা তরুণী। এদিকে এর আগে মুমুকসু আশ্রমেই চিন্ময়ানন্দের চিকিৎসা চলছিল। একদল চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সেখানেই ছিলেন অভিযুক্ত বিজেপি নেতা, একই সঙ্গে গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে পুলিশের নজরবন্দিও চলছিল।
বছর তেইশের নির্যাতিতা চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে লাগাতার ধর্ষণ (sexual harassment) ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের অভিযোগ এনেছেন। নির্যাতিতা তরুণী দ্বিতীয় বর্ষে ওঠার পরই চিন্ময়ানন্দের খপ্পর থেকে পালিয়ে যান। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন তিনি। এরমাঝে বেশ কিছুদিন তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। নির্যাতিতার বাবা এই সময় পুলিশ হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ রাজস্থান থেকে নির্যাতিতাকে নিয়ে এলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা তাঁর গোপন জবানবন্দি নেন। সেখানে নির্যাতিতা বলেন চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে তাঁর কাছে অনেক ভিডিও আছে, তবে সেসব প্রকাশের আগে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কেননা ইতিমধ্যেই কেস তুলে নেওয়ার জন্য শাহজাহানপুরের কালেক্টর তাঁর বাবাকে হুমকি দিচ্ছেন। কেন চিন্ময়ানন্দকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না তানিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন নির্যাতিতা। আরও পড়ুন-‘আশ্চর্য! এই বয়ান বাহাদুররা কোথা থেকে আসে?’, রামমন্দির ইস্যুতে উদ্ধবকে ঠুকলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
Shahjahanpur: BJP leader Swami Chinmayanand has been arrested in connection with the alleged sexual harassment of a UP law student. pic.twitter.com/gxZxr81qN6
— ANI UP (@ANINewsUP) September 20, 2019
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার পারিবারিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। তিনি চিন্ময়ানন্দের ল কলেজে আইন পড়তে আসেন। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে হওয়ায় কম খরচে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। এমনকী কলেজের লাইব্রেরিতে একটা পার্টটাইম চাকরিও তাঁর জুটে যায়। চিন্ময়ানন্দ নিজে একদিন তাঁকে ডেকে পাঠান। কলেজের মালিক ডেকেছেন শুনে আশ্রমে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান ওই ছাত্রী। সেখানে চিন্ময়ানন্দ তাঁকে হস্টেলে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু খরচের ভয়ে প্রথমটায় কিছুই বলেননি ওই তরুণী। তবে চাকরিটা হয়ে যাওয়া বাড়ি থেকে যাতায়াত না করে হস্টেলেই তাকছিলেন। একদিন চিন্ময়ানন্দ তাঁকে ফোনে আশ্রমে আসতে বলেন। জানান, ওই ছাত্রীর স্নানের ভিডিও তাঁর হাতে এসেছে। চিন্তিত তরুণী সেখানে গেলে তাঁর সঙ্গে সহবাস করতে বলেন, নাহলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। গত বছর জুন থেকেই লাগাতার চিন্ময়ানন্দের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন নির্যাতিতা। এই বছর জুলাইতে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েই ফেসবুকে চিন্ময়ানন্দের কীর্তিকলাপ ফাঁস করে দেন।