নরেন্দ্র মোদি ও উদ্ধব ঠাকরে (Photo Credit: IANS)

নাসিক, ১৯ সেপ্টেম্বর: ঈশ্বরের নামে অন্তত ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার উপরে ভরসা রাখুন। রামমন্দির সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও রকম বোকামি করবেন না। মহারাষ্ট্রের নাসিকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যখন প্রতিদিনই প্রায় সুপ্রিম কোর্টে রাম জন্মভূমি ও বাবরি মসজিদ বিতর্ক সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি হয় তখন তানিয়ে  সাধারণ মানুষই বা কেন নানারকম বাধার সৃষ্টি করছে। ভেবেই অবাক প্রধানমন্ত্রী। ঠিক কোন কারণে কাদের উদ্দেশ্য করে তিনি একথা বললেন তা প্রথমে স্পষ্ট না হলেও পরে বোঝা যায়। মূলত শরিক শিবসেনাকে উদ্দেশ্য করেই ক্ষোভ উগরে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গত সোমবারই শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে  (Uddhav Thackeray) বলেছিলেন, “অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য কেন্দ্রের এখনই একটি আইন প্রণয়ন করা উচিত। যেমন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা (Article 370) তুলতে কেন্দ্র কোনও আইনের দার প্রথমে ধারেনি। যে উৎসাহে কাশ্মীরের ভোল বদলে দিয়েছে, ঠিক একই উৎসাহে রামমমন্দির  (Ram Mandir) তৈরি করে ফেলুক। আমরা আশা করব, এই কাজের জন্যে শীর্ষ আদালতের নির্দেশের অপেক্ষা না করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে প্রয়োগ করবে। কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্র যেমন তৎপর একইভাবে রামমন্দির ইস্যুতেও যেন সেই তৎপরতা দেখায়, এটাই আমাদের অনুরোধ।” আজ এই চাই কাল তাই চাই বলে শরিক শিবসেনা প্রতিনিয়ত বিজেপিকে চাপে ফেলে দিচ্ছে। সামনেই মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ঠিক তার আগে রামমন্দির ইস্যুকে সামনে রেখে ফের ভোট কেনাবেচায় নেমে পড়লেন উদ্ধব ঠাকরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকেই  (Prime Minister Narendra Modi) মুখ খুলতে হল। তিনি নাম না করেই শিবসেনা প্রধানকে একহাত নিয়ে বললেন, “আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি এই ‘বয়ান বাহাদুরদের’ কথা ভেবে, এরা কোথা থেকে এসেছে? কেন সুপ্রিম কোর্টের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে? ভারতবাসী নির্বিশেষে সুপ্রিম কোর্ট, সংবিধান এবং ভারতের বিচার বিভাগের প্রতি সকলের বিশ্বাস রাখা উচিত। ইশ্বরের দোহাই, দেশে বিচার বিভাগের উপরে ভরসা রাখুন।”

উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ বুধবারই পাঁচ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির ডিভিশনবেঞ্চে রামমন্দির-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানেই ডিভিশনবেঞ্চের তরফে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, আগামী ১৮ অক্টোবরের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তির একটা চেষ্টা করা যেতে পারে। এরআগে রামমন্দির বারি মসজিদ বিতর্কের সমাধান সূত্র খুঁজতে কাঠগড় ছেড়ে মধ্যস্থতাকারীর উপরে ভরসা করেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। তবে তাতে লাভ কিছু হয়নি অয়োধ্যার জমির মালিকানা রয়েছে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, রাম লালা ও নির্মোহী আখড়ার হাতে। কোনও পক্ষই মধ্যস্থতাকারীর রা মানেত রাজি না হলে ফের শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্টে। তারপর থেকে এই মামলা সমাধানে প্রায় প্রতিদিনই সু্প্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। এদিক ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলার রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিকে তিন মালিকানায় ভাগ করে দিতে চেয়েছিল। তবে সেই রায়ের বিরোধিতায় সুপ্রিমকোর্টে এক ডজনেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে।