ফাইল ফটো (Photo Credits: ANI)

দেশের স্বাধীনতার পর প্রথম এই গ্রামের কেউ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (দশম শ্রেণীর) পাশ করল। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বারাবাঙ্কির নিজামপুর (Nizampur) গ্রামে স্বাধীনতার পর থেকে কেউ দশম শ্রেণীর গণ্ডি টপকাতে পারেননি। আসলে ওই গ্রামে শিক্ষার আলো একেবারেই পৌঁছয়নি। অষ্টম শ্রেণী পাশের সংখ্যাও তেমন বেশী নয়। কিন্তু শিক্ষার আলো এনে এবার উত্তরপ্রদেশে দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করল ১৫ বছরের রামকেভাল। দলিত অধ্যুষিত নিজামপুর নামের গ্রামের বাসিন্দা রামবেভাল বিয়েবাড়িতে লাইটম্যানের কাজ করত। বিয়ে বাড়ির আলো দেওয়া ছেলেটাই এবার গ্রামে শিক্ষার আলো নিয়ে এল। বিয়েবাড়ির শোভযাত্রায় আলো দেখিয়ে আড়াইশো টাকা রোজগারের সবটাই তার পরিবারের হাতে তুলে দিতে রামকেভাল।

এবার গ্রামের তিনজন পরীক্ষা দেয়, পাশ করে শুধু রামকেবাল

বিয়েবাড়ির কাজ সেরে রাতে বাড়িতে ফিরে সৌরশক্তির মাধ্যমে চলা ল্যাম্প জ্বেলে পড়তে বসত ও। দিনে হলে আবার কাজের খোঁজে বের হতে হত। অনেকেই বলেছিল, এভাবে পড়াশখোনা করে পাশ করা যাবে না। কিন্তু রামকেভাল বারবার বলত, সে অনায়াসে পাশ করবে। সেটাই হল। চলতি বছর উত্তর প্রদেশের দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ওদের গ্রাম থেকে তিনজন পরীক্ষায় বসেছিল। তার মধ্যে দুজন ফেল করে, শুধু রামকেবালই পাশ করে। গ্রামটিতে তিনশো জনেরও বেশী মানুষ বাস করে। রামকেবালের পাশের খবরে প্রশাসনের স্থানীয় কর্তারা বেশ খুশি। ওদের গ্রাম থেকে নিকটতম স্কুলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের মত।রামকেবলের সাফল্যের পর ওদের গ্রাম থেকে কাছাকাছি দূরত্বের মধ্যে স্কুল তৈরির দাবি উঠেছে।

প্রথমবার গ্রামের কেউ দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ করল

এবার দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ করার লক্ষ্য

রামকেভালের মা স্কুলে রান্নার কাজ করে, বাবা দিনমজুর। দুজনের অনিয়মিত রোজগারের টাকায় সংসার চলত না। আর তাই কষ্টের সংসার চালাতে তাই বিয়েবাড়ির আলো বহন করতে হয় তাকে। কিন্তু অনেকে ছেড়ে দিতে বললেও, গ্রামের সব অন্ধকার মুছে রামকেভাল দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ করল। এবার সে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির চেষ্টা করবে বলে রামকেবাল জানিয়েছে।