Techie Atul Subhash Dies by Suicide (Photo Credits: X)

গত ১০ ডিসেম্বর চব্বিশ পাতার একটি সুইসাইট নোট লিখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন  বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত অতুল সুভাষ (Atul Subhash)। এবার সেই মামলার রেশ ধরে অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংঘানিয়া সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বিএনএস-এর ১০৮ এবং ৩(৫) ধারার অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করল  মারাঠাহল্লি পুলিশ। অতুলের ভাই বিকাশ কুমারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে নিকিতা সিংঘানিয়া, তার মা নিশা সিংঘানিয়া, ভাই অনুরাগ সিংঘানিয়া এবং কাকা সুশীল সিংঘানিয়া বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তফন্ত শুরু করেছে মারাঠাহল্লি পুলিশ।

সুভাষের ভাই বিকাশ কুমার পুলিশকে করা অভিযোগে জানিয়েছেন, অতুলের স্ত্রী তার এবং তাদের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছেন। এতে সুভাষ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। সুইসাইড নোটেও যার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আত্মহত্যার আগে রেকর্ড করা ভিডিওতে তিনি জানিয়েছেন, তিনি একটি বৈবাহিক ওয়েবসাইট থেকে ২০১৯ সালে বিয়ে করেছিলেন। পরের বছর তাদের একটি ছেলে হয়। তার স্ত্রীর পরিবার তার কাছ থেকে একাধিকবার কয়েক লাখ টাকা দাবি করে। যখন তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন, তার স্ত্রী ২০২১ সালে তাদের ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরুর বাড়ি ছেড়ে চলে যান।সুভাষ নোটে লিখেছেন, পরের বছর স্ত্রী তার বিরুদ্ধে হত্যা এবং অস্বাভাবিক যৌন সম্পর্কসহ তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করে একাধিক ধারায় মামলা করেন। স্ত্রীর অভিযোগ ছিল বিয়ের পর সুভাষ ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন এবং সেটি তার স্ত্রীর বাবার উপর চাপ সৃষ্টি করে; যার কারণে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।সুভাষ এই ঘটনাকে বলিউডের একটি দুর্বল চিত্রনাট্য বলে উল্লেখ করেন। কারণ তার স্ত্রী আগেই বলেছিলেন যে, তার বাবা দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গত ১০ বছর ধরে তিনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন এবং এআইআইএমএস থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ডাক্তাররা তাকে কয়েকমাস সময় দিয়েছিলেন। তাই তারা দ্রুত বিয়ে করেন বলেও জানান। অবশ্য এই মামলা পরবর্তীতে প্রত্যাহার করা হয়।

অতুল তার সুইসাইড নোটে লিখেছেন, তার স্ত্রী ও তার পরিবার প্রথমে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ১ কোটি টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু পরে তা বাড়িয়ে ৩ কোটি করা হয়। এরপর তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের বিষয়ে বলতে গিয়ে সুভাষ বলেন, তিনি একবার বিচারককে বলেছিলেন যে, মিথ্যা মামলার কারণে পুরুষরা আত্মহত্যা করে মারা যাচ্ছে। তখন তার স্ত্রী উত্তর দিয়েছিলেন, তাহলে তুমি কেন করছ না? তখন বিচারক হেসে তার স্ত্রীকে কক্ষ ছেড়ে চলে যেতে বলেন। সুভাষ আরও অভিযোগ করেছেন যে, বিচারক পরে তাকে বলেন, ‘তার পরিবারের কথা চিন্তা করে মামলা নিষ্পত্তি করতে তাকে ৫ লাখ টাকা দিতে।

সুভাষ আরও বলেছেন, তার স্ত্রী চলে যাওয়ার পরে তার তার পরিবার তাকে ছেলের সাথে দেখা করতে দেয়নি। এই ধরনের মামলা মোকাবেলা করতে গিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তার সুইসাইড নোটে লিখেছেন, ‘আমি যত বেশি পরিশ্রম করব এবং আমার কাজ যত ভাল হবে, তত বেশি আমি এবং আমার পরিবারকে হয়রানি ও চাঁদাবাজির শিকার হতে হবে। পুরো আইনি ব্যবস্থা আমাকে আরও হয়রানি করার সুযোগ করে দেবে। এখন আমার চলে যাওয়ায় টাকা নিয়ে আর কোনো লেনদেন হবে না। আমার বৃদ্ধ বাবা-মা ও ভাইকেও হয়রানি করার কোনো কারণ থাকবে না। তাই আমি নিজেকে ধ্বংস করে সবকিছু রক্ষা করেছি।’