মুম্বই, ১৬ নভেম্বর: ঋণভারে জর্জরিত রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস (Reliance Communications)-র ডিরেক্টর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অনিল আম্বানি (Anil Ambani)। শনিবার সংস্থার তরফ থেকে একথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শুধু অনিল অম্বানিই নয়। তাঁর সঙ্গে ছায়া ভিরানি ( Chhaya Virani), রায়না কারানি (Ryna Karani), মঞ্জরি ক্যাকার (Manjari Kacker), সুরেশ রাঙ্গচর (Suresh Rangachar)নামে আরও ৪ ডিরেক্টর পদত্যাগ করেছেন। রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস বা আর কমের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে সংস্থার চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার পদ থেকে ৪ অক্টোবর ইস্তফা দিয়েছেন শ্রী মনিকান্তন ভি ( Manikantan V)। কম্পানির তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বকেয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে জুলাই-সেপ্টেম্বর রিলায়েন্স কমিউনিকেশন লোকসান ৩০ হাজার ১৪২ কোটি টাকা পৌঁছেছে। যদিও গত অর্থবর্ষে ১১৪১ কোটি টাকার লাভ করেছিল এই সংস্থা।
মে মাসে সরকারি ভাবে আর কমকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। দেউলিয়া প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে মামলা চলাকালীন ৩৫৭টি দিন বাদ দেওয়ার জন্য সংস্থার করা আবেদন খারিজ করে ন্যাশনাল কম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (NCLT) অনিল অম্বানির সংস্থা রিলায়েন্স কমিউনিকেশন (RCom)কে দেউলিয়া ঘোষণা করে ৷ অনিল অম্বানির এই সংস্থার ঋণ রয়েছে ৫০,০০০ কোটি টাকার উপর। অনিল অম্বানির সংস্থা আবেদন করেছিল, প্রাথমিক দেউলিয়া প্রক্রিয়ার ব্যাপারে ২০১৮ সালের ৩০ মে-২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়কালটা বাদ দিতে। যেহেতু ওই সময়টা স্থগিতাদেশ ছিল।
অনিলের দাদা মুকেশ অম্বানির সংস্থা রিলায়েন্স জিও যেভাবে বিনামূল্যে কল এবং সস্তায় ডেটা দিতে থাকেন তারই জেরে টেলিকম পরিষেবা দিতে মাসুল যুদ্ধে নেমে রিলায়েন্স কমিউনিকেশন বড় ক্ষতির মুখে পড়ে৷ আর-কম তাদের দেউলিয়া প্রক্রিয়া আটকাতে রিলায়েন্স জিওকে স্পেকট্রাম বেচার পথে গেলেও লোকসান আটকানো যায়নি।
গত বছরের মার্চে বড় ভাই মুকেশ পাশে না দাঁড়ালে এরিকসন মামলায় সাজা পেতেন অনিল আম্বানি। কিন্তু তারপরও অনিল অম্বানির বিপদ কাটেনি। তাঁর বাণিজ্যিক সাম্রাজ্যেকে বাঁচাতে রিলায়েন্স ক্যাপিটাল-র সম্পত্তি বিক্রি করতেও মরিয়া হন তিনি ৷ টেলিকম, বিদ্যুৎ, পরিকাঠামো সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিলের সংস্থাগুলিতে এখন আকাশছোঁয়া আর্থিক ঋণভার৷ এত দিন সুরক্ষিত থাকলেও রিলায়েন্স ক্যাপিটাল (আরক্যাপ) যা ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম মিউচ্যুয়াল ফান্ড সেটির হাতে মার্চের শেষে নগদ সঞ্চয় কমতে কমতে এখন মাত্র ১১ কোটি টাকা। শেয়ার বাজারে এই শিল্পগোষ্ঠীর সাতটি নথিভুক্ত সংস্থার অবস্থা খারাপ।