চিরাচরিত পদ্ধতিতে নির্মিত ঐতিহ্যবাহী একটি যুদ্ধজাহাজ আগামীকাল ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হবে। তে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। পঞ্চম শতকে অজন্তা গুহাচিত্র থেকে পাওয়া জাহাজের ছবির অনুকরণে এই যুদ্ধ জাহাজটি নির্মাণ করা হয়েছে। এজন্য ২০২৩ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং হোদি ইনোভেশন্সের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। এই প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর এই জাহাজের নির্মাণকাজের সূচনা হয়েছিল। কেরলের কারিগররা প্রাচীন পদ্ধতি মেনে এই জাহাজটি নির্মাণ করেছেন।

 

 নৌকোটির  নকশা, কারিগরি মাপকাঠি ও নির্মাণকাজের সবটাই ভারতীয় নৌবাহিনীর পর্যবেক্ষণে হয়েছে। সহযোগিতায় ছিল হোদি ইনোভেশন্স এবং প্রথাগত কারিগররা। এই ধরনের জাহাজের কোনোও বাস্তব নকশা না থাকায় শিল্পীদের সাহায্যে এর দ্বিমাত্রিক নকশা তৈরি করা হয়। এই প্রকল্পে পুরাতাত্বিক ভাষ্য, নৌ স্থাপত্য, হাইড্রো ডায়নামিক পরীক্ষা এবং প্রথাগত কারিগরি দক্ষতা- সব কিছুরই সমন্বয় ঘটাতে হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারতীয় নৌবাহিনীকে সাহায্য করেছে আইআইটি মাদ্রাজের সমুদ্র কারিগরি দপ্তর।

জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক প্রাচীনত্বের প্রতি বিশ্বস্ততা রক্ষার পাশাপাশি এটি যাতে সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়েছে। কাঠের তৈরি এর বিভিন্ন অংশ এবং প্রথাগত স্টিয়ারিং বর্তমানে বিশ্বের কোথাও পাওয়া যাবে না।

নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে। ভারতীয় নৌবাহিনী এটিকে প্রাচীন সমুদ্র পথগুলিতে নিয়ে যাবে। গুজরাট থেকে ওমানে জাহাজটির প্রথম যাত্রার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে।

প্রথাগত পদ্ধতিতে কাঠের তৈরি এই জাহাজ ভারতের জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রের কুশলতা ও সমৃদ্ধিকে তুলে ধরে। এর পাশাপাশি ভারতীয় নৌবাহিনী ভারতের সমুদ্র ঐতিহ্যের সংরক্ষণে কতটা আগ্রহী, তারও প্রতিফলন ঘটেছে এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে।