Lok Sabha Elections 2019: এই দশটা আসনের ফলের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ
দেশজুড়ে সাত দফায় ৫৪৩টি আসনে ভোটপর্ব চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনের যজ্ঞটা এত বড় যে তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলে। চলতি লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে-নরেন্দ্র মোদী না রাহুল গান্ধী, নাকি তৃতীয় শক্তির কেউ-দেশের মসনদে বসবেন সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই।
দেশজুড়ে সাত দফায় ৫৪৩টি আসনে ভোটপর্ব চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনের যজ্ঞটা এত বড় যে তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলে। চলতি লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে-নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) না রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) , নাকি তৃতীয় শক্তির কেউ-দেশের মসনদে বসবেন সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দেশের ৫৪৩টি আসনের মধ্যে কোন দশটি কেন্দ্রের দিকে বিশেষভাবে নজর রয়েছে---
১০) মুম্বই উত্তর ,মহারাষ্ট্র (Mumbai North)
মুম্বইয়ের এই কেন্দ্র বারবরই আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। এই কেন্দ্রে বিজেপি-কংগ্রেসের শক্তি একটা সময় প্রায় সমান সমান ছিল। তবে গত লোকসভায় এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী সঞ্জয় নিরুপম (Sanjay Nirupam)-কে ৪ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে চমকে দেন বিজেপি প্রার্থী গোপাল শেঠি (Gopal Shetty)। অথচ এর আগের দুটো নির্বাচনে এই কেন্দ্রে কংগ্রেস খুব টাফ ফাইটের পর জিতেছিল। এবার নিজেদের গড় উদ্ধারে বলিউড তারকা উর্মিলা মাতন্ডকার (Urmila Matondkar) কে প্রার্থী করে চমকে দিয়েছে কংগ্রেস। উর্মিলা সরাসরি মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে খবরে আসছেন। গতবার চার লক্ষের বেশি ভোটে জেতা বিজেপির আসনে উর্মিলা গদি উল্টে দিতে পারেন কি না সেটাই দেখার।
৯) কানপুর,উত্তরপ্রদেশ (Kanpur, UP)
১৯৯৯, ২০০৪, ২০০৯। পরপর তিনবার কংগ্রেসের জেতা এই আসনে গতবার বড় মার্জিনে জিতেছিলেন বিজেপির অভিজ্ঞ নেতা মুরলী মনোহর যোশী (Murli Manohar Joshi)। কিন্তু বয়সের কারণে এবার মুরলী মনোহর যোশীকে প্রার্থীপদ না দিয়ে মোদী-শাহ ঝুঁকি নিয়েছেন। মুরলী মনোহর যোশী প্রার্থী না হওয়ার হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর পরিবর্তে বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে সত্যদেব পাচুরিকে। গতবার হেরে যাওয়া প্রাক্তন সাংসদ শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল কংগ্রেসের প্রার্থী। এসপি. বিএসপি জোটের প্রার্থী এখানে রামকুমার (Ramkumar)। মুরলী মনোহর যোশীর মত নেতাকে টিকিট না দেওয়াটা বিজেপির ক্ষতি করে দেয় কি না সেটাই দেখার।
৮) পুরী ,ওডিশা (Puri Lokshabha)
একটা সময় শোনা যাচ্ছিল এই পুরী থেকে প্রার্থী হতে পারেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। তবে মোদী শেষ অবধি লড়ছেন না। মোদীর পরিবর্তে বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে তাদের মুখপাত্র তথা তারকা নেতা সম্বিত পাত্রকে। ওডিশায় পদ্মের বিস্তারের পর পুরী নাকি এখন বিজেপি সেফ সিট। নবীন পট্টনায়েকের বিজেডি মরিয়া হয়ে পুরীতে জিততে মরিয়া হয়েছে। গতবার এই আসনে বিজেডি প্রার্থী আড়াই লক্ষেরও বেশি ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন। সেখানে বিজেপি হয়েছিল তৃতীয়। তৃতীয় থেকে এই আসবনে সম্বিত পাত্রকে প্রার্থী করে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি।
৭) গোরখপুর,উত্তরপ্রদেশ (Gorakhpur)
যোগি আদিত্যনাথ (Yogi AdityaNath) এখান থেকে পাঁচবার সাংসদ হওয়ার নজির গড়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু যোগী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর নিয়ম মেনে সাংসদ পদ ছাড়ার পরই উপনির্বাচনে হেরে যায় বিজেপি। একেবারে নিশ্চিত জেতা আসন ফের দখল করতে ভোজপুরি তারকা রবী কিষাণকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। মায়া-অখিলেশ জোট বাঁধাটা সফলভাবে শুরু হয়েছিল গোরখপুর থেকে। এই কেন্দ্রের লড়াই জমে গিয়েছে।
৬) গান্ধীনগর ,গুজরাট (Gandhi Nagar)
লালকৃষ্ণ আদবানীর জিতে আসা এই আসনে এবার প্রার্থী বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আদবানীকে অপ্রাসঙ্গিক করে অমিত শাহ কি পারবেন এখান থেকে জিততে। যদিও এই আসনটি একেবারে বিজেপি-র নিশ্চিত জেতা আসন। ১৯৮৪ সালের পর থেকে বিজেপি এই কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে জিতে আসছে এই কেন্দ্রে। গতবার আদবানী এখান থেকে জিতেছিলেন প্রায় পাঁচ লাখ ভোটে। অমিত শাহ-র জয়ের মার্জিনের দিকে সবার নজর থাকবে। আদবানীর উপর সহানুভূতির হাওয়াটা অমিতকে বিপদে ফেলে কি না সেটাই দেখার।
৫) জয়পুর গ্রামীণ,রাজস্থান (Jaipur Rural)
এই কেন্দ্রে প্রার্থী দেশের দুই সফল প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অলিম্পিক পদকজয়ী শ্য়ুটার রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরের বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে অলিম্পিয়ান ডিসকাস থ্রোয়ার কৃষ্ণা পুনিয়াকে। যে কৃষ্ণা কমনওয়েলথ গেমসের সোনা জিতেছিলেন। অলিম্পিকেও পদকের কাছে চলে গিয়েছিলেন। গতবার এই কেন্দ্রে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তিন লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন রাজ্যবর্ধন রাঠোর। তবে রাজস্থানে এখন হাওয়া বদল হয়েছে। এই কেন্দ্রে রাজ্যবর্ধনের রাজ চ্যালেঞ্জের মুখে।
৪) বেগুসরাই, বিহার (Begusarai )
জেএনইউ-বিতর্ক থেকে গোটা দেশের আলোচনায় আসা কানহাইয়া কুমারের জন্য এই আসনের দিকে সবার নজর। সিপিআই প্রার্থী কানহাইয়া কুমার এখান থেকে জিতলে ইতিহাস হয়ে যাবে। কারণে এখানে সিপিআইয়ের শক্তি, বিজেপি-র থেকে অনেক কম। তার ওপর এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে দাপুটে সাংসদ গিরিরাজ চৌহানকে। গতবার সিপিআই এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল। কিন্তু কানহাইয়া কুমার প্রার্থী হওয়ার পর সিপিআই এখান থেকে অপ্রত্যাশিত জয়ের আশায়। গোটা দেশের নজর এই কেন্দ্রের দিকে।
৩) আমেথি, উত্তরপ্রদেশ (Amethi, UP)
গান্ধী পরিবারের উপর বরাবর আস্থা রাখা এই আসনে জিততে বিজেপি মরিয়া হয়ে উঠেছে। রাহুল গান্ধীকে এখানে হারাতে আদাজল খেয়ে নেমেছে বিজেপি। স্মৃতি ইরানি গতবার অনেক চেষ্টার পরেও রাহুল গান্ধীকে হারাতে পারেননি। তবে এবার তিনি চ্যালেঞ্জটা আরও জোরদার করছেন। গতবার কংগ্রেসের মহাবিপর্যয়ের মাঝেও রাহুল জিতেছিলেন লক্ষাধিক ভোটে। রাহুলের ভোটে জেতার মার্জিন অনেকটা কমেছিল।
২) বারাণসী, উত্তরপ্রদেশ (Varanasi, UP)
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্রের প্রার্থী। স্বাভাবিকভাবেই সবার নজর এই আসনের দিকে। মোদীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী অজয় রাই। যে অজয় রাই গত লোকসভা ভোটে হাত চিহ্নে মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মাত্র ৭৫ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। মোদীর বিরুদ্ধে এসপি, বিএসপি মহাগটবন্ধন জোটের প্রার্থী হলেন বিদ্রোহী জওয়ান তেজবাহাদুর। গতবার মোদী এই কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ভোটে জিতেছিলেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে। এবার মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তবে অনেক হিসেবের পর প্রিয়াঙ্কাকে প্রার্থী না করে, অজয় রাইকেই ফের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাল কংগ্রেস।
১) ওয়ানাড় (কেরল)
সবাইকে চমকে রাহুল গান্ধী এই কেন্দ্রে প্রার্থী। বিজেপি এখানে সেভাবে কোনও ফ্যাক্টরই নয়। তবু রাহুল এখান থেকে প্রার্থী কেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। রাহুলের প্রধান প্রতিপক্ষ এখানে সিপিআই প্রার্থী। রাহুলের কাজটা এই কেন্দ্রে কঠিন।