Late Actor Soumitra Chatterjee's Best Movies: মৃত্যুর সঙ্গে 'তিনপাত্তি' খেলা শেষ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের; ফিরে দেখা তাঁর অভিনীত অনবদ্য বাংলা চলচ্চিত্রগুলি

হাসপাতালে মাসখানেক রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের পর আজ প্রয়াত হলেন বর্ষীয়াণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Actor Soumitra Chatterjee)। বেলা ১২ টা বেজে ১৫ মিনিটে বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ৮৫ বছরের সৌমিত্রবাবু। মৃত্যুর সঙ্গে তিন পাত্তি খেলতে খেলতে ক্লান্ত চোখে চিরনিদ্রায় গেলেন বাংলার প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে বড় পর্দায় তাঁর আবির্ভাব। ১৯৫৯ থেকে ২০২০, হাসপাতালে অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হওয়ার আগে পর্যন্ত করোনাকে ভয় না পেয়ে নিজের কাজের জগতে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ করা আর হল কই?

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

হাসপাতালে মাসখানেক রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের পর আজ প্রয়াত (Passes Away) হলেন বর্ষীয়াণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Actor Soumitra Chatterjee)। বেলা ১২ টা বেজে ১৫ মিনিটে বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ৮৫ বছরের সৌমিত্রবাবু। মৃত্যুর সঙ্গে তিন পাত্তি খেলতে খেলতে ক্লান্ত চোখে চিরনিদ্রায় গেলেন বাংলার প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে বড় পর্দায় তাঁর আবির্ভাব। ১৯৫৯ থেকে ২০২০, হাসপাতালে অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হওয়ার আগে পর্যন্ত করোনাকে ভয় না পেয়ে নিজের কাজের জগতে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ করা আর হল কই?

উত্তম কুমারের পর বাঙালির গর্ব বলতে এই অভিনেতা। যদিও উত্তম কুমার ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ভিন্ন ধারার দু'জন অভিনেতা, কে বেশি কে কম এই দর কষাকষি এখানে হয় না। তিনশোটিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে সৌমিত্র-সত্যজিৎ জুটি বাঙালি তথা আপামর দেশবাসীকে দিয়েছে সেরা কিছু সৃষ্টি। তাঁর ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় মন্ত্রমুগ্ধ করেছে বাঙালিকে।

অপুর সংসার: 'অপুর সংসার' থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ের জগতে অভিষেক ঘটে। অপুর সংসার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি বাংলা চলচ্চিত্র । এই চলচ্চিত্রটি অপু ট্রিলোজির শেষ পর্ব । এই চলচ্চিত্রতেই বিখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিলা ঠাকুর প্রথম বার অভিনয় করেন। অপু-অপর্ণার জুটি মন ছুঁয়ে গেছিল সেদিন, এমনকি আজও।

চারুলতা: চারুলতা সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি চলচ্চিত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় গল্প নষ্টনীড় অবলম্বনে এর চিত্রনাট্য রচিত হয়েছে। ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় এই ছবিটি। অমলের ভূমিকায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন অনবদ্য। প্রাণোচ্ছ্বল, সাহিত্যপ্রেমী, সঙ্গীতপ্রেমী অমলের ভূমিকায় নিজেকে ফুটিয়ে তোলেন।

অরণ্যের দিনরাত্রি: অরণ্যের দিনরাত্রি সত্যজিৎ রায়ের বাংলা চলচ্চিত্র যা ১৯৭০ সালে মুক্তি পায়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত অরণ্যের দিনরাত্রি উপন্যাস অবলম্বনে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল। চার বন্ধু, অসীম, সঞ্জয়, হরি এবং শেখর, কলকাতার বাসিন্দা, ছুটিতে পালামৌ এর কাছাকাছি বেড়াতে আসা থেকে গল্পের শুরু। ছবিতে তাবড় তাবড় অভিনেতাদের সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর অভিনয়ের দক্ষতাও বেশ নজর কেড়েছিল।

বসন্ত বিলাপ: শহরের বসন্ত বিলাপ নামক একটি হোস্টেলের মেয়েদের সঙ্গে পাশের ছেলেদের একটি হোস্টেলের ছেলেদের একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ও আক্রোশকে কেন্দ্র করেএই ছবির প্লট। সেই কারণেই দুই পক্ষই নিত্যনৈমিত্তিক ভাবে নতুন নতুন ফন্দি আঁটতে থাকে। যা এই হাস্য কৌতুকের মূল উপজীব্য। যদিও শেষে হোস্টেলের তিনটি মেয়ে, তিনটি ছেলের প্রেমে পড়ে। পুরো ছবিটাই কমেডি। কমেডি চরিত্রেও এতটুকু খামতি রাখেননি তিনি।

সোনার কেল্লা: সোনার কেল্লার মধ্যে দিয়ে বাঙালির অত্যন্ত পছন্দের চরিত্র, প্রদোষ মিত্রের আবির্ভাব। বাংলায় বোধহয় তাঁর থেকে ভালো ফেলুদা আর দ্বিতীয়টি আর পাবে না। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে ফেলুদা কাহিনীর অন্যতম ভূমিকা আছে। গুপী গাইন বাঘা বাইন ছায়াছবি বানানোর সময় জয়সলমীরে তোলা হাল্লা রাজার দুর্গ হয়ে ওঠে সোনার কেল্লা। ফেলুদার ভূমিকায় প্রথম আবির্ভাব হতেই পর পর এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। ফেলুদা সিরিজে প্রত্যেকটিতে তাঁর অভিনয় যে অনবদ্য তা বাঙালিকে আর আলাদা করে মনে করিয়ে দিতে হয় না। এরপরই 'জয় বাবা ফেলুনাথ'।

হীরক রাজার দেশে: হীরক রাজার দেশে বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। রুপকের আশ্রয় নিয়ে চলচ্চিত্রটিতে কিছু ধ্রুব সত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এটি গুপী গাইন বাঘা বাইন সিরিজের একটি চলচ্চিত্র। এর একটি বিশেষ দিক হচ্ছে মূল শিল্পীদের সকল সংলাপ ছড়ার আকারে করা হয়েছে। তবে কেবল একটি চরিত্র ছড়ার ভাষায় কথা বলেননি। তিনি হলেন শিক্ষক। এই শিক্ষকের ভূমিকায় ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এর থেকে বোঝানো হয়েছে একমাত্র শিক্ষক মুক্ত চিন্তার অধিকারী, বাদবাকি সবার চিন্তাই নির্দিষ্ট পরিসরে আবদ্ধ। তাঁর গলায় 'দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান' এ যুগান্তকারী ডায়লগ হয়ে থাকবে।

কোণি: একটু বয়সের ছাপ পড়েছে, সেইসময়ের ছবি 'কোণি'। সাঁতার শিক্ষকের ভূমিকায় তাঁর চরিত্র আলাদামাত্রা দিয়ে গেছে। যে মাত্রার কোনও পরিমাপ হয় না। 'ফাইট কোণি ফাইট', বাংলার কত কোণিকে লড়াই করতে শিখিয়েছেন তিনি। শিক্ষক হোক এমন, তিনি সকলের পথপ্রদর্শক হয়ে রয়ে গিয়েছেন।

প্রায় শ'তিনেক ছবির মধ্যে প্রায় সবকটিই সেরার সেরা। এমন কোনও চরিত্র নেই যা নিয়ে তাঁকে গর্ব করা যায় না। তিনকন্যা, পুনশ্চ, ঝিন্দের বন্দি, কাপুরুষ, তিন ভুবনের পারে, পরিণীতা, অশনি সঙ্কেত, শাখা প্রশাখা, একাধিক ছোটবড় চরিত্রে তাঁর অভিনয় বাঙালি মনে বিরাজ করছে।

সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদার, অসিত সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, ঋতুপর্ণ ঘোষের মত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

অসুখ: এই চলচ্চিত্রটি তারকা মেয়ে, রোহিণী (দেবশ্রী রায়) এবং তার পিতা সুধাময় (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়)-এর বিভেদ নিয়ে তৈরি, যিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে তার মেয়ের উপার্জনের উপর নির্ভরশীল। রোহিণীর মা (গৌরী ঘোষ), যাকে হঠাত করে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কেউ জানে না তিনি কোন কারণে অসুস্থ। এই অসুস্থতা রোহিণীর জীবনে বিভিন্ন ঘটনা ঘটায় এবং বাবার সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে। পিতার ভূমিকায় সৌমিত্র সত্যিই শিল্পীসত্ত্বার মর্যাদা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন।

বেলাশেষে: তাঁর অভিনীত শেষ কোনও শ্রেষ্ঠ ছবি মনে করতে হলে বেলাশেষের কোথায় মনে পড়ে। জীবনের শেষ সময়ে প্রকাশনা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সাহিত্যপ্রেমী বিশ্বনাথ মজুমদার (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) স্ত্রী আরতির (স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত) সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য যাবতীয় আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন-এই প্লটকে কেন্দ্র করে এক খাঁটি সম্পর্কের গল্প। বয়সের সঙ্গে প্রেমও যে বাড়ে, পুরোনো চাল যেমন ভাতে বাড়ে। তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেক তরুণতরুণীকে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন সম্পর্কের মর্ম এই ছবির মধ্যে দিয়ে।

(Social media brings you the latest breaking news, viral news from the world of social media including Twitter, Instagram and YouTube. The above post is embedded directly from the user's social media account. This body of content has not been edited or may not be edited by Latestly staff. Opinions appearing on social media posts and the facts do not reflect the opinions of Latestly, and Latestly assumes no responsibility for the same.)

Share Now

Share Now