একটা সময় তিনিই ছিলেন বক্স অফিসে বলিউড (Bollywood)-র সেরা বাজি। আর কিছু চলুক না চলুক বলিউডে শাহরুখ খান (Shahrukh Khan)-র সিনেমা অবশ্যই চলবে। সলমন খান (Salman Khan), অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar)-দের মত মেগাস্টারদের সিনেমা যখন ফ্লপ করছে, তখন বলে বলে হিট দিচ্ছিলেন শাহরুখ। তখন কিং খানকে নিয়ে একটা কথা চালু হয়েছিল--বলিউডে শুধু তিনটে 'S'চলে--সাসপেন্স, সেক্স আর শাহরুখ। কিন্তু অন্তত বছর বারো বক্স অফিসে রাজ করার পর, বেশ কয়েক বছর ধরেই শাহরুখের ক্যারিশ্মায় ভাটা পড়েছে। গত কয়েক বছরে শাহরুখের সিনেমা ফ্লপ তো হয়েইছে, সমালোচকরাও একেবারে নম্বর দেননি। কিং খানের শেষ সাতটা সিনেমার মধ্যে বক্স অফিসে তিনটে সিনেমা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ে। 'জিরো'(Zero), 'রইস'(Raees), 'ডিয়ার জিন্দেগি'(Dear Zindagi)-র মত সিনেমায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েও প্রত্যাশিত সফলতা পাননি শাহরুখ। কিন্তু কেন! আসুন শাহরুখ খানের সিনেমা বক্স অফিসে সেভাবে আর না চলার পিছনে কারণ--
৫) সিনেমা বাছায় সমস্যা
সিনেমা বাছার বিষয়ে শাহরুখ খানের একটা সমস্যা বরাবরই ছিল। লগান-এ আমিরের ভূবনের চরিত্রে শাহরুখই নাকি প্রথম পছন্দ ছিলেন। রাজকুমার হিরানিও নাকি মুন্নাভাইয়ের চরিত্রে প্রথমে শাহরুখকেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শাহরুখ অন্য সিনেমায় ব্যস্ত থাকবেন বলে ডেট দেননি বলে শোনা যায়। এমন আরও কয়েকটা উদাহরণ রয়েছে। চিত্র সমালোচকরা বলছেন, শাহরুখ খান গত পাঁচ বছরে বেশিরভাগই ভুল সিনেমায় সাইন করেছেন। শাহরুখ খানের সিনেমা বাছাইয়ের এর পিছনে একটা মরিয়াভাবে ফিরে আসার চেষ্টা কাজ করছে। আর সেটা করতে গিয়ে অনেকটা পরীক্ষানিরীক্ষার পথে হেঁটে নিজের 'কোর ফ্যান'দের হারিয়েছেন শাহরুখ। ঠিক এর উল্টো কাজ করে অক্ষয় কুমার ম্যাজিক করছেন।
৪) টিম গড়তে সমস্যা
সলমন খানের আছে আলি আব্বাস জাফর। আমির খানের রাজকুমার হিরানি। অক্ষয় কুমারের আছে নিজের টিম গড়ার ক্ষমতা। কিন্তু শাহরুখ এখনও কোন সেট টিম করতে পারেননি। পরিচালক আলি আব্বাস জাফর আলির হাত ধরে সলমন- সুলতান, টাইগার জিন্দা হ্যায়-এর মত বড় হিট দিয়েছেন। আমির খানের 'থ্রি ইডিয়েটস', 'পিকে'-র সফলতার পিছনে রয়েছেন পরিচালক রাজকুমার হিরানি। শাহরুখ সেখানে একমাত্র রোহিত শেঠি-র সঙ্গে দুটো সিনেমা ছাড়া, গত কয়েক বছর ধরে বারবার পরিচালক বদলেছেন।
৩) ফোকাস হারানো
অনেকেই বলছেন, আইপিএল থেকে প্রোডাকশন, অন্যান্য ব্যবসা। শাহরুখ নাকি এখন অন্য়ান্য কাজে এত ব্যস্ত যে সময় দিতে ছবি বাছাইয়ের কাজে সেবাবে সময় দিতে পারছেন না। এখানেই আসছে কিং খানের ফোকাস হারানোর প্রসঙ্গ। অবশ্য জিরো-সিনেমার পিছনে শাহরুখ যে সময় দেন, তারপর তার ফোকাস হারানোর সমস্যাটা সেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না।
২) শাহরুখ গড়ের রুচি পরিবর্তন
সব অভিনেতারই বক্স অফিসে একটা নিজস্ব গড় থাকে। শাহরুখ খানের যেমন শক্তির জায়গা কলকাতা, দিল্লি সহ উত্তর ভারত। ২০০০-২০১২-শাহরুখের বেশিরভাগ সিনেমাই হিট হয়েছে মেট্রো শহরে ভাল ব্যবসা করে। কিন্তু এইসব অঞ্চলে এখন অন্য ধরনের সিনেমা-মূলত ভালো গল্পভিত্তিক সিনেমা ভাল ব্যবসা করে। এতেও শাহরুখের ছবির ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। কলকাতাতে একটা সময় শাহরুখ খানের সিনেমা মানেই প্রথম সপ্তাহ পুরো হাউসফুল। কিন্তু এখন সেটা আর হচ্ছে না।
১) দেশে মহাতারকা শব্দের অর্থের পরিবর্তন
দেশে এখন সিনেমার সবচেয়ে বড় নায়ক হয়ে উঠছে-কনটেন্ট, কাহিনি। যত ভাল গল্প সিনেমা তত হিট। যেটা আগে ছিল যত বড় নায়ক. সিনেমা তত হিট।