২০১৮-র মার্চে এসেছিল সেই মন খারাপ করা খবর। নিউরো এন্ডোক্রাইন টিউমারে ভুগছেন বলিউডের প্রতিভাবান অভিনেতা ইরফান খান। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসার জন্য লন্ডনে উড়ে গিয়েছিলেন। প্রায় বছর খানেক বাদে ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে সেখান থেকে দেশে ফেরেন তিনি। প্রিয় অভিনেতার শারীরক অবস্থার কথা জেনেও তাঁর পরিবার পরিজন থেকে শুরু করে অনুরাগী ও সহকর্মীরা প্রায় সকলেই চাইছিলেন অলৌকিক কিছু ঘটুক। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠুন ইরফান খান। কেউই এই অমূল্য ধনকে হারাতে চায়নি। তবে যে যাই চাক না কেন, ভাগ্য অন্যকিছুই ঠিক করে রেখেছিল।
গত ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার কোলনে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেতা। ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে তাঁর নশ্বর শরীর। তাঁর মৃত্যু সবার কাছেই এক চরম আঘাতের মতো। কেউই এই প্রতিভাবান অভিনেতার চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারেনি। স্বামীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরিবারের তরফে সুতপা সিকদার (‘Life Is Not Cinema, There Are No Retakes’) এক বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, গোটা পৃথিবী কীভাবে ইরফানের চলে যাওয়াকে ব্যক্তিগত ক্ষতি হিসেবে দেখছে। স্বামী ইরফান জীবনভর স্ত্রী সুতপাকে এতটাই আদরে আব্দারে রেখেছিল যে আজ অভিনেতার পারফেকশনিস্ট মনোভাব তাঁকে কিছুতেই সাধারণ হয়ে উঠতে দেয় না। এই বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন যেন চিত্রনাট্য ছিল। আমি তার নিখুঁতভাবে সবটাই মানতে চেয়েছিলাম। তাকে সুস্থ রাখতে কখনও কোনও কিছুই মিস করিনি।
OFFICIAL STATEMENT from #IrrfanKhan’s family - his wife Sutapa and sons Babil and Ayaan... pic.twitter.com/VRpcaV9Y4V
— taran adarsh (@taran_adarsh) May 1, 2020
সুতপার কথায়, “শেষ দেড় থেকে দুটি বছর আমার কাছে অভিনয়ের মধ্যবর্তী একটা সময়ের মতো। যেখানে ইরফান চূড়ান্তভাবে অর্কেস্ট্রা বাজিয়ের ভূমিকায় অভিনয় করছে। আমাদের ৩৫ বছরে দাম্পত্য থেকে একেবারে আলাদা। ”আমাদের বিয়ে ছিল না, এটা যেন একটা ইউনিয়ন। আমার ছোট্ট পরিবারকে একটা নৌকায় দেখতে পাই। দুই ছেলে বাবিল ও অয়ন বাবা ইরফানের পরামর্শ মেনে প্যাডেল করে এগিয়ে চলেছে। “ওখান থেকে নয় এখান থেকে ঘোরো।” এটাও ঠিক যে জীবন সিনেমা নয়, তার কোনও রিটেক হয় না। তাদের বাবার পরামর্শ মেনেই আমার ছেলেরা যেন প্রবল ঝড়ের মধ্যে পড়েও সেই নৌকা নিরাপদে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আন্তরিকভাবে তাই কামনা করি।