মুম্বই, ১০ জানুয়ারি: নমস্কার আপনারা দেখছেন লেটেস্টলি বাংলা। আমি রয়েছি আপনাদের সঙ্গে শর্মিতা। এই সপ্তাহের মুভি রিভিউ- ছপক। ছবিটি মুক্তির আগেই শুরু হয়েছিল প্রচুর কন্ট্রোভার্সি। কেন গেছেন দীপিকা জেএনইউতে। সেই নিয়ে প্রমোশন-ইমোশন। সব হয়েছে। এমনকী, অ্যাসিড হামলাকারীর ধর্ম নিয়েও হয়েছে কাঁটাছেঁড়া। কিন্তু বিশ্বাস করুন ছবিটি পুরো অন্য কথা বলে।
ছবিটির পরিচালনায় রয়েছেন মেঘনা গুলজার। যিনি বরাবরই সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি করেন ছবি। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি কোনও। অ্যাসিড আক্রান্ত লক্ষ্মী আগরওয়ালের জীবনের কঠিন লড়াই নিয়ে তৈরি ছবিটি। অ্যাসিড হামলার পরও থেমে থাকেনি তাঁর জীবন। লজ্জা ভয়কে দূরে ফেলে লড়াই করে গেছেন ১৯ বছরের তরুণী। লড়াইটি ছিল অনেক দীর্ঘ এবং কঠিনও। কিন্তু কখনও ভেঙে পড়েননি তিনি। লক্ষ্মীর চরিত্রেই অভিনয় করছেন দীপিকা। যার অনস্ক্রিন নাম মালতী।
ঘটনাটি ২০১২র। দিনের আলোয় দিল্লির রাজপথে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে মালতির পারিবারিক বন্ধু বসির খান এবং বন্ধুরা। এরপর মজবুত চিত্রনাট্যের জেরে অনস্ক্রিনে ফুটে উঠেছে সেই কঠিন লড়াই। অ্যাসিড হামলার পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে নিজেকে দেখে আঁতকে চিৎকার করে ওঠেন মালতী। কিন্তু হার মানেননি। চাকরির জন্য ছুটে গিয়েছেন এদিক ওদিক। এরপর কোর্ট-কাচারির ঝামেলা সামলেও, অ্যাসিড আক্রান্তকারী মেয়েদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালায় মালতি। এখানেই শেষ নয়। এরপরও চলত একের পর এক কঠিন অস্ত্রোপচার। তারউপর কঠিন লড়াইয়ের পরও আদালতে অভিযুক্তদের বারবার জামিন হয়ে যাওয়া। এতকিছুর পরও মাথানত না করে লড়ে গেছেন তিনি। আর মালতীকে সঙ্গ দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী অর্চনা। এই চরিত্রে এককথায় অসাধারণ অভিনয় মধুরজিত্ সারঘির। আমোল, যাঁর কথা না বললেই নয়। দীপিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন বিক্রান্ত মেসি অর্থাৎ আমোল।
তবে একটা বিষয় না বললেই নয়। ছবিটিতে আক্রান্তকারীকে বেচারা দেখানো হয়নি। কিন্তু মালতীকে দেখে কোথাও মনের ভিতর মোচর দেবে। তবে ছবিটার প্রথম হাফটা যতটা ভাল। দ্বিতীয় হাফটা ততটা নয়। ইন্টারভেলের পর কোথাও যেন ছবিটি থিতিয়ে গিয়েছে। আপনার মনে হবে কী হচ্ছে, কী বলতে চাইছে সেটাই বোঝা যায়নি। তবে দীপিকা এককথায় অসাধারণ হলেও কোথাও একটা কিছুটা মিসিং ছিল। মেকআপ-সহ সব ঠিক আছে কিন্তু যেন মন থেকে হচ্ছে না কিছু একটা। আসলে রাজি এবং তলবারের জন্য মেঘনা গুলজার নিজের জন্য একটি মাপকাঠি ঠিক করে দিয়েছিলেন। সেই এক্সপেকটেশন টাই হয়তো পুরো করতে পারেনি ছপক। তবে, ছপক নিসন্দেহে একটি সাহসী ছবি। যা মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সুর চরায়।
আর হ্যা ছবিটির উপরি পাওনা ছবির গান। গুলজারের লেখা এবং শংকর এহসান লয়-এর সুরে নোক-ঝোক গানটি আপনার মন ছুঁয়ে যাবেই। তাই লেটেস্টলি বাংলার তরফ থেকে ছপক পেল ৫-এ ৩টি লেটেস্টলি। দেখুন ভিডিও----