সেই কবে ‘ এন ইভনিং ইন প্যারিসে’(An evening Paris) (শর্মিলা ঠাকুরের(Sharmila Tagore) বিকিনি শোভা দেখে চোখ কুঁচকেছিল রক্ষণশীলরা।তারপর কেটেছে দীর্ঘ সময়।এরই মাঝে শরীরি বিভঙ্গে ঝড় তুলে পটাকা অভিনেত্রীর জায়গা করে নিয়েছেন পারভিন ববি(Parveen Babi), জিনত আমনের(Zeenat Aman) মতো পোড় খাওয়া অভিনেত্রীরা।পরবর্তিতে মাধুরী দীক্ষিতের(Madhuri Dixit)ধক ধক করনে লাগা, হৃদয়ে ঝড় তুলে দেওয়া পাহাড়ি ঝর্না মণীষা কৈরালা(Manisha Koirala) ‘যুগপুরুষে’ মন কেড়ে নিলেন।আয়েশা জুলকা, মমতা কুলকার্নি, সোমি আলি কখন যেন টিনসেল টাউনের রানি হয়ে গিয়েছেন সুস্মিতা সেন(Sushmita Sen)।এই বঙ্গললনার ফিগার তখন উঠতি অভিনেত্রীদের ভাবাচ্ছে।এরই মধ্যে চলে এলেন নীল চোখের সুন্দরী ঐশ্বর্যা রাই(Aishwarya Rai)।বলিউড একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর নিজেকে ভেঙেছে, প্রত্যেক পরতে কিছু মুখ যেন মাইল ফলকের কাজ করেছে।‘দাবাংয়ে’র মালাইকা অরোরা(Malaika Arora), ‘মার্ডারে’র মল্লিকা শেরাওয়াত(Mallika Sherawat), ‘রেসে’র ক্যাটরিনা কাইফ(Katrina Kaif) যৌনতা যেন লাস্যে ভরপুর।ফের পটপরিবর্তনের সময় এসে গেল আরব সাগরের নীল জলে তরঙ্গ তুলে নামলেন প্রখ্যাত পর্ন স্টার সানিলিওনি(Sunny Leone)। নেমেই লাখো পুরুষের হৃদয়ে তুললেন ঝড়, নিন্দুকরা রে রে করে তেড়ে এলেও ততক্ষণে বেবিডল দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছেন, বাকিটা ইতিহাস।আপাত রক্ষণশীল ভারতের মধ্যে একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হল এই বি-টাউন।যেকোনও নতুনকেই সাদরে গ্রহণ করা ফিল্ম পাড়ায় শুরু হল প্রথাভাঙার পালা।খ্যাতনামা পর্ন স্টারদের দিয়েই সেলুলয়েড মাতালেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা।একবার চলুন এই পর্ন স্টারদের(Porn Star) বলিউড স্টার হয়ে ওঠার গল্পটা শুনে নিই।
সানি লিওনি(Sunny Leone)
২০১২-তে পরিচালক মহেশ ভাটের ছবি দিয়েই বলিউডে পা রাখেন পর্ন স্টার সানি লিওনি, ছবির নাম ‘জিসম-২’।বলা বাহুল্য, প্রথমেই দর্শকরা কিন্তু সানিকে নিতে পারেনি।শুধু শরীরি বিভঙ্গ তো এক নায়িকা অভিনেত্রীর হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিতে পারে না।ছবির আইটেম ডান্স ও সঙ্গে কিছু যৌনতায় ভরপুর সিকোয়েন্স।এসবের পরত থাকলেও সিনেমা হলে দর্শক টানতে গেলে অভিনয়টা করতেই হয়।বলিউডে প্রথিতযশা অভিনেত্রীর অভাব নেই, তারমধ্যে সানির এই আগমন অনেকেই ভাল চোখে নেননি।তবে কোনওভাবেই হেরে যাওয়ার জন্য বি-টাউনে পা রাখেননি এই পাঞ্জাব কি কুঁড়ি। সাধ্যমতো খাটাখাটনি করে অভিনয় দক্ষতায় নিজেকে চৌখস করে তুললেন।বলাবাহুল্য বিগবসের মঞ্চ থেকে বলিউডে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও জিসম-টু সানিকে একটু হলেও পরিচিতি দিল।ফিল্ম পাড়ার রথীমহারথীদের অবজ্ঞা হজম করেই দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেন এই পর্নস্টার ‘রাগিনী এমএমএস-টু’ তে ফাটিয়ে নাচলেন।ধীরে ধীরে অভিনয়টাও রপ্ত হয়ে গেল। বলিউডের পারফেকশনিস্ট আমীর খান তো সানির বিপরীতে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে আছেন।এর থেকে বড় কমপ্লিমেন্ট আর কী হতে পারে।
মিয়া মালকোভা(Mia Malkova)
বছর ছাব্বিশের আমেরিকান পর্ন স্টার মিয়া মালকোভা।খুব অল্প বয়সেই নিজের কেরিয়ার গ্রাফকে উপরের দিকে নিয়ে গিয়েছেন।তাঁকে দিয়েই তথ্যচিত্রে অভিনয় করিয়ে নিলেন বলিউডের পরিচালক রামগোপাল বর্মা। ছবির নাম ‘গড সেক্স অ্যান্ড ট্রুথ’।২০১৮-র ২৬ জানুয়ারি এই তথ্যচিত্র মুক্তি পায়।এমনিতেই রামুর ছবি নিয়ে হতাশ হওয়ার মতো ঘটনার শেষ নেই। সেই জায়গা থেকে এই তথ্যচিত্র কিন্তু অনেকটাই সিনেম্যাটিক উৎকর্ষতা ছুঁয়েছে।পরিচালক রামুর সঙ্গে কাজ করে খুশি পর্নস্টার মালকোভাও।একইভাবে ছবি রিলিজের আগে ট্যুইটে ঝড় তুলতে ছাড়েননি রামু।বলেছেন, মিয়া মালকোভা এতটাই জনপ্রিয় একটি নাম যে গুগলও তাঁকে ভুলতে চায় না।সেই জনপ্রিয়তার ধারেকাছে আসেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা দেশের অন্যতম ধনী মুকেশ অম্বানি।যৌনতা যে জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই ছবির মূল কথা।যৌনতা নিয়ে নারীরাও অকপট হোক এই ছবির পরতে পরতে সেই বার্তার হাতছানি।
সিলভেস্টার স্টালোন(Sylvester Stallone)
মার্কিন অভিনেতা সিলভেস্টার স্টালোনের কথা মনে আছে নিশ্চই। জনপ্রিয় ছবি, ‘রকি অ্যান্ড ব়্যাম্বো’ স্টালোনকে খ্যাতির ক্যারিশ্মা উপভোগ করতে শিখিয়েছে।গোটা পৃথিবী ‘রকি অ্যান্ড ব়্যাম্বো’ (Rocky & Rambo) বলতে শুধু তাঁকেই মনে করে।এই সিলভেস্টার স্টালোন কিন্তু একদিনে স্বীকৃতি পাননি তার পিছনে রয়েছে লম্ব দৌড় যেখানে তিনি পর্নস্টার হিসেবেই পরিচিত।মার্কিন অভিনেতা থুড়ি পর্নস্টার স্টালোন বি-টাউনেও খাতা খুলেছেন।‘কমবখত ইশক’ (Kambakkht Ishq) ছবিতে অভিনয় করে ভারতীয় দর্শকদের মনেও নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।এই ছবিতে স্টালোনের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন অক্ষয় কুমার(Akshay Kumar) ও করিনা কাপুর(Karina Kapoor)।
জ্যাকি চ্যান(Jackie Chan)
পর্ন স্টার জ্যাকিকে অভিনেতা করে দর্শককে নতুন স্বাদের ছবি উপহার দিয়েছে এই বলিউডই।সাতের দশকের মাঝামাঝি নাগাদ পর্ন স্টার হিসেবে লাইমলাইটে চলে আসেন জ্যাকি।ক্লাসিক পর্ন ফিল্মে তাঁকে রিকশা চালকের ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছে।পেশাদার অভিনেতা হওয়ার আগে জ্যাকি চ্যান একাধারে মার্শাল আর্টে দক্ষ স্টান ম্যান ছিলেন, সিনেমার পরিচালনা, প্রযোজনা, গায়ক কি না করেননি তিনি।বলিউডে এসে ‘কুংফু যোগা’ (Kung Fu Yoga)ছবিতে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দেন এই পর্নস্টার। চাইনিজ অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার কমেডি ছবি এই ‘কুংফু যোগা’, যেখানে জ্যাকির সঙ্গে অভিনয় করেছেন সোনু সুদ(Sonu Sood), দিশা পাটানি(Disha Patani) ও অ্যামায়রা দস্তুর(Amyra Dastur)।
সাহারা নাইট(Sahara Knite)
এই ব্রিটিশ পর্ন স্টারের সঙ্গে ভারতের একটা সম্পর্ক রয়েই গিয়েছে।এমনিতেই জনপ্রিয় টিভি সিরিজ তথা বিশ্বখ্যাত ফ্যান্টাসি সিরিজ ‘দ্য গেম অফ থ্রোনস’ (The game of Thrones)সাহারাকে খ্যাতি এনে দিয়েছে।এই সিরিজের ভারতীয় দর্শকের সংখ্যা নেহাত কম নয়।সাত সমুদ্র ১৩ নদীর পাড়ের বাসিন্দা হলেও সাহারা নাইট কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত।খুব শিগগির এই পর্নস্টারকেও বলিউডে ডেবিউ করতে দেখা যাবে।