ওয়াশিংটন ডিসি, ২ আগস্ট: ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি (আইএনএফ)’। ৩২ বছর আগে তদানীন্তন সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ড মিখাইল গর্বাচভ ও মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ডা রেগন যে চুক্তিতে সই করছিলেন ২০১৯-এর ২ আগস্ট সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে এলেন মার্কিন প্রসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বভাবতই একই পথ ধরেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই চুক্তি ভেঙে যাওয়াতে যে পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন বাড়বে তা এককথায় নিশ্চিত হয়ে গেল। ফের যে ঠান্ডা যুদ্ধের সময়টা ফিরতে চলেছে তার আভাস পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আরও পড়ুন-কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত পাকিস্তানই যথেষ্ট, তৃতীয় পক্ষের দরকার নেই
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গোড়ার দিকেই ন্যাটো দেশগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে আমেরিকা একটি অভিযোগ বার বার আনছিল যে আইএনএফ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। খুব গোপনেই এই কাজটি করছে মস্কো। রাশিয়া নাকি আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের দেশগুলিকে পাল্লার মধ্যে রেখেই ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র বসাতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে ন্যাটো জোটের দেশগুলির সঙ্গে বৈঠকও করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে এই অভিযোগ আনার পর ন্যাটো জোটের দেশগুলি তা মেনেও নেয়। তারপরেই রাশিয়াকে বিষয়টি জানানো হয়। বলা হয়, পুতিন যদি এই চুক্তির শর্ত মানতে না চায় তাহলে আমেরিকার কোনও অসুবিধা নেই। রাশিয়াকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হল, এরমধ্যেই জানাতে হবে আইএনএফ চুক্তি রাশিয়া মানছে কি না। আজই ২ আগস্ট। এরমধ্যে পুতিনের তরফে এনিয়ে কোনও বার্তা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে এসে পৌঁছায়নি। উল্টে চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে গেলে যে রাশিয়ার কোনও অসুবিধা নেই তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা।
এই প্রসঙ্গে গতমাসেই ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছিলেন, ‘‘রাশিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে সেগুলি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। তাদের গতিবিধি ঠাওর করাও খুব মুশকিল। সেগুলি কয়েক মিনিটের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে পারে ইউরোপের শহরগুলিকে। বুঝতেই পারছি, চুক্তির দিন ফুরিয়ে এল!’’ আজকের ঘটনা পরেই এর ফলে যে পরমাণু যুদ্ধের দিনগুলির আশঙ্কা জোরালো ভাবে ফিরে এল, তা বুঝিয়ে দিতে দেরি করেননি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুয়েতেরস। বলেছেন, ‘‘পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে ছেদ পড়েছিল, তা আবার শুরু হতে চলেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হল অনেকটাই। এর ফলে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হানাদারির আশঙ্কা, ওই সব অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি অবশ্যই বেড়ে যাবে। কমবে না।’’