কলকাতা, ১১ নভেম্বর: বিধ্বংসী বুলবুলের (Cyclone Bulbul) প্রভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকা সুন্দরবন, কাকদ্বীপ, সাগরে। মাটির বাড়ি সমস্ত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। গাছ পড়ে আটকে গিয়েছে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। শহর কলকাতাতেও বেশ কয়েকটি বড় গাছ পড়েছে। এই ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে দীগার সমুদ্রে তলিয়ে গিয়েছেন এক যুবক। সম্পত্তিহানির পরিমাণ বিরাট অংকের। তবে রবিবার সারাদিন দক্ষিণবঙ্গের আকাশ ছেয়ে মেঘ থাকলেও বৃষ্টি সেভাবে না হওয়াতে আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে। জি ২৪ ঘণ্টার খবর অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকেই ঝকঝকে আকাশ, রোদ্দুরের মুখ ও দেখা গিয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের খবর, বুলবুলের কারণে রাজ্যের বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢোকায় এখনই শীত পড়ছে না। তবে আকাশ থেকে মেঘ যত কাটবে ততই শীতের রাস্তা প্রশস্ত হবে। অর্থাৎ সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই রাজ্যে শীত পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। এখন শীত না পড়লেও আবহাওয়া অনেকটাই মনোরম তাপমাত্রা বেশ কম। এই সপ্তাহের শেষে তা ২০ ডিগ্রির নিচে নামতে পারে বলে খবর। মাত্র দুদিন আগেই বুলবুলের জেরে প্রায় ধ্বংসের চেহারা নিয়েছে রাজ্যের একাংশ। বাংলাদেশের অবস্থা আরও খারাপ। বুলবুল থেকে রেহাই পায়নি ফনি বিধ্বস্ত ওড়িশাও। বুলবুলের তাণ্ডবে রাজ্য এখনওপর্যন্ত সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা নয়। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের, দেওয়াল চাপা পড়ে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। আর পূর্ব মেদিনীপুরে গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। শনিবার রাতভোর তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে চলে গেছে বুলবুল। তার আগে লণ্ডভণ্ড করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা-পূর্ব মেদিনীপুরের (East Mednipur) বিস্তীর্ণ এলাকা। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। আরও পড়ুন-Cyclone BulBul Update: সাগরদ্বীপে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, গতিবেগ ১২০ কিলোমিটার
এদিকে উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে সোমবার 'বুলবুল' বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। হেলিকপ্টারে চড়ে তিনি নামখানা (Namkhana)ও বকখালির (Bakkhali) পরিস্থিতি পরিদর্শন করবেন। তারপর বুলবুল দুর্গত মানুষদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিয়ে কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৯টি জেলার জেলাশাসকদের প্রাথমিক রিপোর্ট নবান্নে এসে পৌঁছেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯ জেলার ৩ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজারের বেশি বাড়ি। প্রায় ৯ হাজার গাছ পড়েছে। ৯৫০টি মোবাইল টাওয়ার ভেঙে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi)পর মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে পরিস্থিতি খোঁজ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।