Nabaneeta Dev Sen: ৮১-তেই পূর্ণচ্ছেদ,  চলে গেলেন ‘ভালবাসা’র সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন
নবনীতা দেবসেন (Photo Credit: Twitter)

কলকাতা, ৮ অক্টোবর: চলে গেলেন সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন (Nabaneeta Dev Sen)। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বাবা নরেন দেব ও মা রাধারাণীদেবীর একমাত্র সন্তান নবনীতা দেবসেন সাহিত্যালোকের মধ্যেই কাটিয়েছেন শৈশব মেয়েবেলা থেকে আজীবন। মা-বাবার বাড়ি ‘ভালোবাসা’-তেই থেকেছেন আজীবন। দক্ষিণ কলকাতার হিন্দুস্থান পার্কের সেই বাড়িতেই বৃহস্পতিবার রাতে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন। কবিতা দিয়ে হাতে খড়ি একে একে উপন্যাস রম্যরচনা, পাঠক সমাজ এক অন্য জগতের সন্ধান দিয়েছেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য (Jadabpur University Comparative Literature) নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। নিজেও ২০০২ সাল পর্যন্তা সেখানে অধ্যাপনাও করেছেন। ভারতের ধর্মীয় বহুত্ববাদের তত্ত্ব তাঁর বর্ণনায় অসাধারণ।

১৯৫৯ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম প্রত্যয়‘ দিয়ে ততদিনে পা রাখা হয়ে গেছে লেখালেখির জগতে। প্রথম উপন্যাস ১৯৭৬ এ প্রকাশিত ‘আমি অনুপম’। নানা রঙের লেখায় গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তবে শুধু যাদবপুর নয়, বিভিন্ন সময় ইউরোপ ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যুক্ত ছিলেন নবনীতা। পড়ানোর ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু থেমে থাকেনি তাঁর কলম। একের পর এক লিখে গিয়েছেন কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, উপন্যাস। রম্যরচনাতেও নজরকাড়া মুন্সিয়ানা। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৮। আত্মজীবনী মূলক রম্যরচনা ‘নটী নবনীতা‘ গ্রন্থের জন্যে ১৯৯৯ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান নবনীতা দেবসেন। ১৯৬০ সালে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নবনীতা। মাত্র ১৩ বছরের দাম্পত্য। ১৯৭৩-এ তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। অমর্ত্য সেন বিয়ে করেন এক বিদেশিনীকে। তবে নবনীতা আর সেই পথে আগ্রহ দেখাননি। এই বিচ্ছেদ তাঁকে বেদনানীর্ণ করলেও মুখ ফুটে কখনওই তানিয়ে আলোচনা করেননি। বরং লেকনিতে পরিস্ফুটিত হয়েছে সেই অব্যক্ত যন্ত্রণা। আরও পড়ুন-Babul Supriyo Responds to Mamata Banerjee in Language Discrimination: ভাষাবৈষম্য আন্দোলনে নামছেন মমতা ব্যানার্জি, উত্তরে বাবুল সুপ্রিয় যা বললেন...

শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে কবিতা লিখেছেন। বছর খানেক আগেই সেই বই প্রকাশিত হয়েছে। শোনা যায় সাহিত্যিক সুনীল গাঙ্গুলীর ভাবনাতেই এই কবিতাগুচ্ছ। শত অসুস্থতাতেও মানুষ নবনীতা কখনওই জীবনের উদযাপনকে ভোলেননি। নশ্বর শরীর যে একদিন ঘুমিয়ে পড়বে সেই উপলব্ধি তিনি করতেন। তাইতো আমৃত্যু লেখনিকে সঙ্গেই রেখেছিলেন।