Mamata Banerjee: তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড়াতে যে পাঁচ টোটকা দিলেন প্রশান্ত কিশোর! চার বড় নেতাকে বসানো সহ জোড়া ফুল সতেজে ফর্মুলা
মমতাকে পরামর্শ প্রশান্ত কিশোরের। (Photo Credits: PTI)

কলকাতা, ১ জুলাই: লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2019) বড় ধাক্কা খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের ১৮টি লোকসভা আসনে জিতে, ৪০ শতাংশের ওপর ভোট পেয়ে তৃণমূলের একেবারে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িকও পড়েছে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সিংহাসন ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি দ্বারস্থ হয়েছেন নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। যে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরে সাফল্য পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি, নীতীশ কুমার-রা।

ইতিমধ্যেই দিদিকে জেতাতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোর। যদিও তৃণমূল সরকারীবাবে প্রশান্ত কিশোরের নিয়োগ নিয়ে কোনও সরকারী মন্তব্য করেনি। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তৃণমূল ভবনে রাজ্যের শাসক দলের বৈঠকেও হাজির ছিলেন বিখ্যাত এই ভোট বিশেষজ্ঞ। আরও পড়ুন- West Bengal: শোভন চ্যাটার্জি কি যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে ?

শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায় দলের ভরাডুবির পিছনে কী কারণ থাকতে পারে, তা নিয়ে প্রশান্ত কিশোর সুপ্রিমো মমতা ব্য়ানার্জি ছাড়াও, তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। ১১ জুলাই বিধানসভার অধিবেশন শেষ হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। যত তাড়াতাড়ি দলকে আবার গুছিয়ে নিতে মরিয়া দিদি। শোনা যাচ্ছে তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রাথমিকভাবে কিছু কাজ করতে বলেছেন। এক নজরে দেখে নিন ভোট বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোরের জোড়া ফুল বাঁচানোর পাঁচ টোটকা--

১) স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে পদক্ষেপ নিতে হবে

লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হারার পিছনে দলীয় নেতাদের ভাবমূর্তি বড় কারণ ছিল বলে মনে করেন ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোর। আর তাই প্রশান্ত তৃণমূলকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে পদক্ষেপ নিতে বলেন বলে খবর। প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ হল আগামী পুরসভা নির্বাচনের আগেই দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং মন্ত্রীকেও কার্যত বসিয়ে দিতে হবে মমতা ব্যানার্জিকে। কিছু বাংলা দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই এমন চার নেতা মন্ত্রীর নাম তৃণমূলনেত্রীকে জানিয়েও দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর মতে, দলের ভাবমূর্তি খারাপ হওয়ার পিছনে অনেকটাই দায়ী ওই চার নেতা। তাঁদের মধ্যে অন্তত এমন একজন রয়েছেন যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় এবং আস্থাভাজন।

২) মিরাজাফরদের চিহ্নিত করতে হবে

বিজেপি যে ১৮টি লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছে তার মধ্যে অন্তত ৮-১০টি আসন তৃণমূল হেরেছে দলীয় অন্তর্কলহে। মেদেনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বনগাঁ-র মত কেন্দ্রে হার প্রমাণ করে তৃণমূলের অন্দরে থেকেই অনেক নেতাই বিজেপি-র হয়ে গোপনে ভোট করিয়েছেন। অতীতের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে প্রশান্ত কিশোর নাকি বলেছেন, দলে 'মিরাজাফর'-রা থাকলে কিছুতেই জেতা যায় না। কিন্তু সেইসব গোপন বিদ্রোহীদের চিহ্নিত করা খুব কঠিন, কারণ তারা প্রকাশ্যে দলবিরোধী কা না করে, গোপনে বিরোধীদের সাহায্য করে। প্রশান্ত কিশোর ঠিক সেটাই করতে বলেছেন। এক লাইনে বললে দাঁড়ায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিরজাফরদের তাড়াতে হবে।

৩) মিডিয়া নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে

মিডিয়ার সামনে দলীয় নেতাদের কু মন্তব্য, খারাপ কাজ দলের ক্ষতি করছে, তাই মিডিয়া নিয়ে আরও সতর্ক হতে বলেছেন প্রশান্ত।

৪) কাজের মানুষদের আরও দায়িত্ব দিতে হবে

দলে কাজের মানুষদের আরও দায়িত্ব দিতে হবে। নীচু তলার কর্মীদের কথা শুনে কর্মসূচি নিতে হবে। এমন পরমার্শই দিয়েছেন ভারতের এক নম্বর ভোট বিশেষজ্ঞ।

৫) বিরোধী-দের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না, নেতা-কর্মীদের মেপে পা ফেলতে

বিরোধীরা নানাভাবে জলঘোলা করতে পারে, উত্তেজিত করতে পারে। কারণ বিরোধীদের কাজটা ঘোলাজলেই সহজ হয়। রাজ্যের শাসক দলের নেতা হয়ে সেই ফাঁদ পা দেওয়া চলবে না বলে প্রশান্ত পরামর্শ দিয়েছেন।