করোনাভাইরাস (Photo Credits: Pixabay)

কলকাতা, ২১ মে: এবার কোভিড-১৯ গবেষণার জন্য বিশ্বে এই প্রথম কোনও মহিলার দেহ দানের ঘটনা ঘটল খাস কলকাতাতেই৷ করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে ঠিক কীভাবে ডালপালা মেলে তার কারণ চিকিৎসকরা খুঁজে বের করুক৷ সেকারণেই ৯৩ বছরের জ্যোৎস্না বোস (Jyotsna Bose) দেহ দান করলেন৷ কলকাতার গন্দর্পণ নামের এক এনজিও এই দেহ দান সংক্রান্ত বিষয়ে প্রথম বিবৃতি প্রকাশ করে৷ তবে জ্যোৎস্নাদেবীর আগে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ব্রজ রায়ের মরদেহে প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হয়েছে৷ বলাবাহুল্য, আজীবন দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ ব্রজ রায় নিজেই কোভিডে মারা যান৷ এর পর প্রবীণ জ্যোৎস্না বোস করোনায় মারা সরকারি হাসপাতালে তাঁর মরদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হল৷ আরও পড়ুন-Coronavirus in West Bengal: রাজ্যে কিছুটা কমল সংক্রমণের সংখ্যা, চিন্তায় রাখল করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা

একইভাবে কোভিডে মৃত বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর মরদেহ দান করা হয় ওই একই কাজে৷ তিনিই হলেন পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বাসিন্দা যাঁর মরদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হয়েছে৷ এদিকে ট্রেড ইউিয়ন নেত্রী জ্যোৎস্না বোসের নাতনি তৃষা বোস জানিয়েছেন, “১০ বছর আগে ব্রজ রায়ের সংস্থায় মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিলেন জ্যোৎস্নাদেবী৷ গত ১৪ মে তিনি করোনা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে বেলেঘাটার এক হাসপাতালে ভর্তি হন৷ দিনদুয়েক পরেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ গত মঙ্গলবার আমার দিদার মরদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷ দেশের মধ্যে এই প্রথম কোভিডে মৃত কোনও মহিলার মরদেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হল৷ আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে বিশেষ কিছুই জানি না, কারণ এটি একেবারেই নতুন একটা রোগ৷ তাই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে এই মারণ রোগ কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে তার বিশদ তথ্য আমাদের জানার প্রয়োজন রয়েছে৷ প্যাথলজিক্যাল অটোপসি আমদের সেই তথ্য পেতে সহযোগিতা করবে৷”

তৃষা নিজে প্যাথলজি নিয়ে এমডি পড়ছেন৷ ১৯২৭ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জ্যোৎস্না বোসের জন্ম হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্ব চলাকালীন বার্মা থেকে ফের সময় নিখোঁজ হয়ে যান জ্যোৎস্নাদেবীর বাবা৷ সেই সময় গোটা পরিবার তীব্র অর্থকষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন অতিবাহিত করেছে৷ সংসারের দুঃখ ঘোচাতে তরুণী জ্যোৎস্না বেশিদূর পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি৷ অল্প বয়সেই ব্রিটিশ টেলিফোনসের অপারেটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন৷