বিষ্ণুপুর, ২১ ডিসেম্বর: ‘১০ বছরের বিবাহিত সম্পর্ক ভাঙল, রাজনীতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাংলা থেকে হটিয়ে ছাড়ব, দৃপ্তকণ্ঠে বলছি।’ স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ এদিন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়ে একথাই বললেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, “একজনকে ভালোবাসতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন কাড়তে পারি না। সুজাতাকে কোনওদিন বুঝতে দেইনি যে ওর চাকরি নেই। আমি মানুষের জন্য লড়াই করব। আজ থেকে কোনও সম্পর্ক নেই। বাইরে দেখতে দেখতে নিজের ঘরটাই সিঁদ কেটে চুরি হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পারিনি ঘরের লক্ষ্মীটাকে চুরি করে নিয়ে গেছে। আমার কোনও রাগ অভিমাননেই, ভাল থাকুক এটাই চাই। আমাকে যদি ইঙ্গিত করেন যা বলবে তাই মেনে নেব। আজকের প্রেসমিট আমার ব্যক্তিগত ছিল। আগামী কাল থেকে দল যা বলবে তাই মেনে নেব।”
শুভেন্দু অধিকারীরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দুদিন পরেই তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ এদিন তৃণমূল ভবনে সৌগত রায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়ে জানান, এতদিনে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিলেন তিনি। সুজাতাদেবী বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি যোগ্য লোককে জায়গা দেয় না। আগামী দিন কে বলতে পারে আমার এই সিদ্ধান্তে শামিল সৌমিত্র খাঁ হবে না।
স্ত্রীর এহেন সিদ্ধান্তে বেজায় ব্যাথিত সৌমিত্র খাঁ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমার উপরে ৩৬টা কেস ঝুলছে। তৃণমূলে যখন ছিলাম একটাও কেস ছিল না। আজ পর্যন্ত কোনও মহিলার সঙ্গে একদিনও কাটায়নি। তোমার চাকরি যেদিন চলে গেছিল সেদিন বলেছিলাম, আমার স্যালারির অর্ধেকটা তোমায় দেব। তোমায় না জানিয়ে ৭০ হাজার টাকা প্রতিমাসে তোমার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতাম। তোমার চাকরি অভিষেক ব্যানার্জি মমতা ব্যানার্জি কেড়ে নিয়েছিল। তুমি বিজেপির জন্য কিছু করোনি, স্বামীর জন্য করেছো। তারজন্য আমি তোমার কাছে ঋণী। তুমি আমাকে নিশ্চিতভাবে জিতিয়েছ, তবে সৌমিত্র খাঁ এর আগে এমএলএ, এমপি ছিল। গ্রাম পঞ্চায়েতের মেম্বার ছিল। রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে করছি। আজও পর্ন্ত বাড়িটা দোতলা করতে পারিনি। আমার শ্বশুর বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষীর বন্দোবস্ত করেছিলাম। কোনওদিন কষ্ট দেওয়ার কষ্ট দেইনি। শুধু বলেছিলাম তৃণমূল কংগ্রেসকে বাংলা থেকে হটানোর জন্য লড়াইটা করতে দাও। আমি গৃহবন্দি ছিলাম তুমি বাইরে লড়াই করেছো। তবে নিশ্চিতভাবে বিজেপি না থাকলে সৌমিত্র খাঁ এক লাখ ভোটও পেত না। যার নির্দেশে তোমার বাড়ি ভাঙা হয়েছিল তার সাথ দিলে তুমি দিলে। তুমি রাজনীতির কিছু বোঝো না। সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী না হলে তোমায় কেউ চিনত না। যাদের বুদ্ধিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাল করেছো। তবে আমরা রাজনীতি করি অনেক মানুষের আশা ও ভালবাসা নিয়ে।