কুলতলিতে (Kultali) এক চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা। শুক্রবার গভীর রাতে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা। শনিবার এই ঘটনায় এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং একটি থানায় ভাঙচুড় চালায় ক্ষুব্ধ জনতা। এরমধ্যে আবার মৃতদেহ তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত করার অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই আসরে নেমেছে বিজেপি। তাঁদের দাবি, দেহ সংরক্ষণ করতে হবে। কোনও কেন্দ্রীয় হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত ও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল।

অগ্নিমিত্রা জানিয়েছেন, "আমরা মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁর বাবাকে বলেছি যে পুলিশের কাছে দেহ সংরক্ষণের দাবি জানানো হোক। এই দাবি আমরা করতে পারব না, ফলে মৃতার বাবা-মা যদি বলেন তবেই দেহ সংরক্ষণ হবে। আমরা চাই প্রথমবার ময়নাতদন্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় অভিমতের জন্য কেন্দ্রের অধিনস্থ কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হোক। হতেই পারে এটা ধর্ষণ, গণধর্ষণ বা কিছুই নয়। ফলে সঠিক বিষয়টি সামনে আনার জবন্য দেহ সংরক্ষণ জরুরি। আমরা পারলে আদালতে যাব এবং এই ঘটনার জন্য সিবিআই তদন্তের আবেদন জানাবো। এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এর দায় নিতে হবে"।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার মহিষমারিহাটে টিউশন পড়তে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। প্রতিদিনের মতো সে একাই পড়তে যেত এবং একাই ফিরত। এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ পড়তে যাওয়ার পর সেখান থেকে ফেরার সময় কাছের একটি বাজারে বাবার দোকানে গিয়ে দেখাও করে এসেছিল সে। কিন্তু দোকান থেকে আর বাড়িতে ফেরেনি। সন্ধ্যে পেরিয়ে গেলেও মেয়ে বাড়িতে না ফেরায় সন্দেহ হয়। এরপর পরিবার জয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে সেখান থেকে কুলতলি থানায় পাঠায় পুলিশ। আবার কুলতলি থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করলে মহিষমাড়ি ফাঁড়িতে যায় অসহায় বাবা-মা। কিন্তু কোনও থানা অভিযোগটি গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বলে অভিযোগ পরিবারের। এমনকী কুলতলি থানা এফআইআর নিতেও অস্বীকার করে।

এসবের মাঝেই স্থানীয়দের সাহায্যে গভীর রাতে এলাকার একটি জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার নিথর দেহ। গায়ে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল বলেও জানা যায়। দেহ উদ্ধারের পর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। আর তারপরেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতার হয় এক অভিযুক্ত। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের অভিযোগ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণেই মৃত্যু হয়েছে কিশোরীর। পুলিশ যদি আগে থেকে তদন্ত শুরু করত তাহলে সম্ভবত মেয়েটি বেঁচে যেত। এদিকে গ্রেফতার হওয়া যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অবশ্য অভিযোগ স্বীকারও করেছে বলে জানা গিয়েছে।