প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও অনির্বাণ গাঙ্গুলি (Photo Credits: @anirbanganguly)

কলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন একেবারে দোরে কড়া নাড়ছে। ভোটযুদ্ধে নামতে রাজনৈতিক দলগুলি ঘর গোছাতে শুরু করেছে পুরোদমে। এই কাজে সবথেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। সরস্বতী পুজোর সকালে মুম্বইতে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর বাড়িতে যান আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবৎ। স্বাভাবিক ভাবেই মহাগুরুর বিজেপি যোগ নিয়ে জল্পনা বাড়ে। মোহন ভাগবত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়ালেও মিঠুন জানান, আরএসএস প্রধানের সঙ্গে তাঁর আধ্যাত্মিক যোগ রয়েছে। এতে রাজনৈতিক যোগ নেই। তবে হাওয়া যেভাবে উল্টো বইছে তাতে মিঠুনের এহেন বক্তব্যে আস্থা কেউ রাখেননি বললেই চলে। তবে সরস্বতী পুজোয় বিজেপির মাস্টার স্ট্রোক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prasenjit Chatterjee)। এদিন রাতেই তাঁর টালিগঞ্জের বাড়িতে গেলেন ডক্টর অনির্বাণ গঙ্গ্যোপাধ্যায়।

এই অনির্বাণবাবু হলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অন্যতম সদস্য। মঙ্গলবার বেশ রাত করেই টলিউডের এই বিশিষ্ট অভিনেতার বাড়িতে যান তিনি। বিষয়টি যখন সবার নজরে আসে তখন রাত বেড়েছে। ঠিক কী কারণে অনির্বাণ গঙ্গ্যোপাধ্যায় আচমকা বুম্বাদার বাড়িতে গেলেন তা স্পষ্ট নয়। এনিয়ে প্রসেনজিতের প্রতিক্রিয়াও মেলেনি। তবে অনির্বাণ গঙ্গ্যোপাধ্যায় নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রসেনজিতের সঙ্গে ছবি আপলোড করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, নিজের লেখা বই, “Amit Shah and The March of BJP” বইটি উপহার দিচ্ছেন অভিনেতাকে। অন্যদিকে বুম্বাদাকে হাসিমুখে সেই উপহার গ্রহণ করতেও দেখা যায়। এমনিতে চিরকাল রাজনীতির সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলা প্রসেনজিতকে গত ২৩ জানুয়ারির ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। এরপর থেকেই ছড়িয়েছিল গুঞ্জন। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা সেই গুঙ্জনকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তবে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে যাচ্ছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে একই বিমানে ছিলেন মুকুল রায়। দুজনকে একই গাড়িতে বিমানবন্দর ছাড়তে দেখা যায়। লোকসভা ভোটের আগে এই খবর বাংলার রাজ্যরাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছিল। পরে পরেই কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরতে হয় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। সেই খবরে সবাই মুকুল রায়ের প্রসঙ্গ টানলেও তা উড়িয়েছেন অভিনেতা। এবার তাঁর বাডিতে শ্যামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের মাথার আগমন তো রাজনৈতিক বিসেষজ্ঞদের অন্য কিছুই ভাবাচ্ছে। তবে কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি? বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। নেতাজির স্মরণ অনুষ্ঠানে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রসেনজিতের বক্তব্য ছিল, অরাজনৈতিক। এমনিতে শাসক তৃণমূলের রাজনৈতিক অরাজনৈতিক বহু অনুষ্ঠানে টলিপাড়ার প্রথমসারির মুখদের দেখা যায়। তবে বিজেপি প্রসেনজিতের সঙ্গে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকেও দলে টানছে। ইন্দ্রাণী হালদারও নাকি পা বাড়িয়ে রয়েছেন। দিলীপ ঘোষ এদিকে দেবশ্রী রায়কে পদ্মশিবিরে নিতে চান। যিনি নিজে উজিয়ে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তবে শোভন বৈশাখীর জোরা বাধায় তাঁর আর পদ্মশিবিরে অভিষেক হয়নি। সকালে মিঠুন রাতে বুম্বা, বঙ্গবিজেপি যে জোড়া তাস খেলছে তাতে আর কোনও সন্দেহ নেই।