শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়(File Photo)

কলকাতা, ৩১ আগস্ট: সম্মান ও মর্যাদায় আঘাত পড়েছিল। বৈশাখীকে অসম্মান করা হয়েছিল। তাই তৃণমূল ছেড়ে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। বিজেপিতে যোগ দানের ১৭ দিনের মাথায় ঠিক একই অসম্মানের গেরোয় পড়তে হল তাঁকে, এমনটাই মনে করছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। আর অসম্মান অমর্যাদা নিয়ে কিছুতেই পদ্ম শিবিরে থাকতে নারাজ এই জুটি। গতকাল রাতে বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে দেখা করেন শোভন-বৈশাখী। সেখানে নাকি বৈশাখীকে কড়া কথাও শোনান বিজয়বর্গীয়। তারপরই বিজেপি ছাড়ার কথা জানিয়ে দেয় বৈশাখী (Baishakhi Banerjee)। আর বান্ধবীর অপমান শোভন মানবেন কেন, তিনিও দলের কাছে নিষ্কৃতি চেয়েছেন। বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্তফা দিতে হলেও আপত্তি নেই।

তবে বিজেপি ছাড়বেনই। সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। কোনও পদ, ক্ষমতা এলাকা কিছুই চাননি। এত বছর রাজনীতি করার পরেও যদি এটুকু প্রাপ্তি না ঘটে তাহলে দূরে থাকাই ভাল। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতারা প্রায় বছর খানেক আগে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন। বৈশাখী ও তিনি রাজনীতিতে একে অপরের পরিপূরক, তারপরও বৈশাখীকে অপমান করা হয়েছে। সেকারণেই গত বছর ২০ নভেম্বর কলকাতার মেয়র পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের সহ্গে একপ্রকার যাবতীয় সম্পর্ক ত্যাগ করেন। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে কারও সঙ্গেই যে তিনি রেয়াত করবেন না তা ফের প্রমাণ করে দিলেন শোভনবাবু। ১৪ আগস্ট বিজেপিতে যোগদানের দিনই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। এমনিতে দেবশ্রীর সঙ্গে যে শোভনবাবুর ভাল সম্পর্ক, তবে বিজেপির সদর দপ্তরে সেদিন দেবশ্রীর উপস্থিত ভাল চোখে নেননি শোভন। একইভাবে বৈশাখীও বিরক্ত হয়েছিলেন। তখনকার মতো শিবপ্রকাশ বলেছিলেন, কোনওভাবে ক্ষতি করার জন্য দেবশ্রী বিজেপির দপ্তরে পৌঁছেছে। এই ঘটনার পর তৃণমূলের সঙ্গে দেবশ্রী রায়ের দূরত্ব বেড়েছে অথচ বিজেপিতে যোগ দেওয়া আটকে গিয়েছে। আরও পড়ুন-Dilip Ghosh: লেকটাউনে হামলা রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ- র ওপর, বিজেপি- তৃণমূল দ্বন্দ্ব দক্ষিণদাঁড়িতে

কলকাতায় ফেরার পর বৈশাখীকে নিয়ে দিলীপ ঘোষের ভা-তডাল মন্তব্য দুজনের কারোরই ভাল লাগেনি। এমনকী দলের একাংশ মনে করেছেন বৈশাখী চাননি তাই দেবশ্রীর বিজেপিতে যোগ দেওয়া আটকে গিয়েছে। এই খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সৌজন্যে শোভনের কানে এসেছে। বৈশাখীও জেনেছেন। এসব দেখেই বেজায় ক্ষিপ্ত কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। তাঁর মতে আগেও বৈশাখীকে নিয়ে ভুল বার্তা ছড়ানো হয়েছে, ফের সেই কাজ শুরু করল বিজেপি। আবার ব্যক্তি জীবনকে নিয়ে চর্চা হচ্ছে। এভাবে রাজনীতিতে থাকতে চাই না নিষ্কৃতি চাই।