Arattai Messaging App: এবার মেড ইন ইন্ডিয়া 'হোয়াটসঅ্যাপ' আরট্টাই -এর সমর্থনে এগিয়ে এসেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। দেশবাসীকে এই স্বদেশী Whatsapp ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছেন মোদী সরকারের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)-এর শুল্ক চাপ, ভিসা নীতি নিয়ে বিরক্ত নরেন্দ্র মোদী সরকার। ট্রাম্প শিক্ষা দিয়েছেন এবার মার্কিন নির্ভরতা কাটাতেই হবে। আত্মনির্ভর ভারতের জন্য তাই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে স্বদেশী পণ্যে পাখির চোখ কেন্দ্রীয় সরকারের। আম ভারতীয় বেশিরভাগ সময়ই মার্কিন পণ্যই ব্যবহার করেন। আর ভারতীয়রা ফোনে সবচেয়ে বেশি যে অ্যাপ ব্যবহার করেন তা হল হোয়াটসঅ্য়াপ। ইন্টারনেটের মধ্যমে ভারতীয়দের বার্তা আদানপ্রদানের জন্য সবচেয়ে বেশি ভরসার হল Whatsapp। আর সেই নির্ভরতা ঝেরে ফেলতে, হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসাবে স্বদেশী মেসেজিং অ্য়াপ 'আরট্টাই'(Arattai App)-কেই বাজি ধরেছে মোদী সরকার। চেন্নাইভিত্তিক জোহো কর্পোরেশনের এই মেসেজিং অ্যাপ এখন প্লে স্টোর থেকে ইনস্টল করা যায়। মার্ক জুকেরবার্গের মেটার মেসেজিং অ্যাপকে ভারতে হারাতে উঠে পড়ে লেগেছে জোহো কর্পোরেশন ((Zoho Corporation)।
আরট্টাই অ্যাপ
ভারতে মেসেজিং অ্যাপের বাজারে নতুন অ্যাপ এসে গেল। আর মোদী সরকারও সেই অ্যাপকে সরাসরি প্রোমোট করতে শুরু করেছে। গত বুধবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ভারতীয় নাগরিকদের 'আরট্টাই' ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। চেন্নাই ভিত্তিক 'জোহো কর্পোরেশন' তৈরি এই দেশে তৈরি অ্যাপটিকে মোদী সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী হোয়াটসঅ্যাপের 'দেশীয় বিকল্প' হিসেবে তুলে ধরেছেন।
মোদী সরকার পুরোপুরি সমর্থন করছে Arattai অ্যাপকে
আরট্টাই অ্যাপের প্রশংসা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, "বিনামূল্যে, সহজে ব্যবহারযোগ্য, নিরাপদ ও সুরক্ষিত এই অ্যাপটা বেশ কার্যকরী।" এটিকে স্বদেশী ডিজিটাল টুল হিসেবে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশী অভিযানের সঙ্গে এটিকে যুক্ত করেছেন, যাতে মানুষ বন্ধু, পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিরাপদে সংযুক্ত থাকতে পারে।
আরট্টাই অ্যাপ কী, ফিচার কেমন
“আরট্টাই” তামিল শব্দ, যার অর্থ 'ক্যাজুয়াল চ্যাট'। অ্যাপটির মূল উদ্দেশ্য দৈনন্দিন যোগাযোগকে সহজ ও আনন্দদায়ক করা। ব্যবহারকারীরা পাঠ্য বার্তা, ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট পাঠাতে পারে, ভয়েস ও ভিডিও কল করতে পারে, স্টোরি তৈরি করতে পারে এবং চ্যানেল ম্যানেজ করতে পারে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও কনটেন্ট শেয়ারিং ফিচারের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে পারে। এখন পর্যন্ত ভয়েস ও ভিডিও কলের জন্য 'এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন' আছে, কিন্তু বার্তার ক্ষেত্রে পুরো সুরক্ষা নেই। এটি হোয়াটসঅ্যাপের মতো সর্বোচ্চ প্রাইভেসি দিতে পারে না।
জোহো কর্পোরেশন
জোহো কর্পোরেশন ১৯৯৬ সালে শ্রীধর ভেম্বু ও টনি থমাস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। চেন্নাই ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বের ১৫০ দেশে ১৩ কোটি ব্যবহারকারীকে ৫৫টির বেশি ব্যবসায়িক অ্যাপ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটির স্লোগান: " ভারতে তৈরি বিশ্বের জন্য তৈরি (Made in India, Made for the World)"।
হোয়াটসঅ্যাপকে কি ছাপিয়ে যাবে 'আরট্টাই'
এখনই তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। আরট্টাই মেসেজের 'এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন' না থাকা একটি বড় সীমাবদ্ধতা। নিরাপত্তা সচেতন ব্যবহারকারীরা এখনও কিছুটা সতর্ক। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রোমোশন দেশীয় প্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়ার একটি বড় পদক্ষেপ। আরট্টাই দেশীয় উদ্ভাবনের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং ভবিষ্যতে যদি নিরাপত্তা উন্নত করা যায়, এটি ভারতীয়দের দৈনন্দিন চ্যাটের ধারা বদলে দিতে পারে। কয়েক বছর আগে টিকটক সহ চিনা অ্যাপগুলির মোকাবিলা 'কু', 'চিঙ্গারি' সহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় অ্যাপকে মোদী সরকার প্রমোট করলেও কোনও লাভ হয়নি। আরট্টাই-য়ের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হবে না বলে আশা মোদী সরকারের।