কলকাতা, ২৯ এপ্রিল: চাতক পাখির মত বৃষ্টির অপেক্ষায় বসে থাকা কলকাতাবাসীর আক্ষেপ বরুণ দেবের কৃপা জুটছে না। কিন্তু ইডেনে অন্য বরুণের কৃপায় জয় পেল কলকাতা নাইট রাইডার্স। বরুণ চক্রবর্তী (Varun Chakrabarthy)র দুরন্ত বোলিংয়ে ভর করে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে প্লে অফের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখল কেকেআর। ৯ ম্যাচ খেলে লিগ টেবিলে দু নম্বরে থাকা কলকাতার পয়েন্ট দাঁড়াল ১২। সমসংখ্যাক শীর্ষে থাকা রাজস্থানের পয়েন্ট ১৬। গম্ভীরের দলকে লিগের শেষ পাঁচটা ম্যাচের মধ্যে অন্তত ৩টি-তে জিতলেই প্লে অফ নিশ্চিত হয়ে যাবে। নাইট রাইডার্সের পিছনে ৯ ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট পেয়ে এখন একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে চেন্নাই, হায়দরাবাদ, লখনৌ ও দিল্লি। প্লে অফে ওঠার লড়াই এবার জমে যাবে।
সোমবার রাতের ইডেন গার্ডেন্সের সৌরভ-পন্টিং-পন্থের দিল্লিকে ২১ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে অনায়াসে হারাল গম্ভীর-শ্রেয়স আইয়ারের দল। পন্থকে আউট করা সহ ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ইডেনে কলকাতার জয়ের নায়ক স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। জয়ের জন্য ১৫৪ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনার ফিল সল্টের ৩৩ বলে বিস্ফোরক ৬৮ রানের ইনিংসটাও দারুণ কাজে দিল।
দেখুন উইনিং স্ট্রোক
Finished In Style 😎#KKRvDC
— Kolkata Knight Riders Universe (@KKRUniverse) April 29, 2024
প্রথমে ব্যাট করে একের পর এক ম্যাচে ২০০ প্লাস স্কোর করে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া কেকেআর-এর দিন রান তাড়া করতে কোনও কষ্টই হল না। পুরো ম্য়াচের কোনও সময়ই মনে হল না কলকাতা এই ম্যাচ হারতে পারে। ইডেনের ভিআইপি বক্সে বসে শাহরুখকে খুব আত্মবিশ্বাসী দেখালো। ২০২৩-এ বলিউডের বক্স অফিসে তিন তিনটে মেগাহিট সিনেমা উপহার দেওয়ার পর শাহরুখকে যতটা নিশ্চিন্ত দেখাতো, এদিনও নাইট রাইডার্সের মালিককে ততটা নিশ্চিন্ত দেখালো।
ইডেনে বাবা-ছেলের খুনসুঁটি
Such a cutest moment of Father & Son 😄#ShahRukhKhan#DCvKKRpic.twitter.com/PZKjkrt7oz
— 😎Sourav Srkian Das😎 (@SrkianDas04) April 29, 2024
এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নামা দিল্লিকে একেবারে স্বচ্ছন্দে দেখালো না। টপ অর্ডারের চার জন- পৃথ্বি শ (১৩) থেকে অভিষেক পোড়েল (১৮), জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগুর্ক (১২), সাই হোপ (৬) পুরোপুরি ব্যর্থ হন। ৬৮ রানের মধ্যেই চার ব্যাটারকে হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় দিল্লি। এরপর অধিনায়ক পন্থ লড়াই করার চেষ্টা করেন। তবে বরুণ চক্রবর্তীর বলে ২০ বলে ব্যক্তিগত ২৭ রানে আউট হয়ে যান পন্থ। অধিনায়কের আউটের পর ৯৩ রানে ৫ উইকেট থেকে দলের রানকে দেড়শো পাড় করতে বড় ভূমিকা নেন কুলদীপ যাদব (২৬ বলে ৩৫)। যে কুলদীপকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনই ব্যাট হাতে কিছুই করতে দেখা যায়নি। প্রিয় মাঠ ইডেনে কুলদীপ ব্যাট হাতে একটি ছক্কা ও ৫টি বাউন্ডারি হাঁকান। বরুণ চক্রবর্তীর পাশাপাশি এদিন ইডেনে বলল হাতে নজর কাড়লেন বৈভব আরোরা (২/২৯) ও হর্ষিত রানা (২/২৮)। চোট সারিয়ে দলে ফিরে মিচেল স্টার্ক ৩ ওভার বল করে দিলেন ৪৩ রান, পেলেন একটি উইকেট। নারিন ৪ ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে নিলেন ১টি উইকেট।
তবে কলকাতার এই ব্যাটিং লাইনআপ আর ইডেনের পিচে প্রথমে ব্যাট করে ১৫৩ রানটা কখনই যথেষ্ট ছিল না। ওপেনিং পার্টনারশিপেসল্ট-নারিনের ৩৭ বলে ৭৯ রানের পার্টনারশিপটাই কলকাতার জয় কার্যত নিশ্চিত করে দিয়েছিল। ওপেনার নারিন (১৫), তিনে নামা রিঙ্কু সিং (১৫) কিছু করতে না পারলেও সল্টের আউটের পর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার (২৩ বলে ৩৩ অপরাজিত), ভেঙ্কটেশ আইয়ার (২৩ বলে ২৬ অপরাজিত) দলকে জিতিয়ে আনেন।