ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল ভারত। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্যতম সবচেয়ে সহজ জয়টা এদিন আমেদাবাদে পেল টিম ইন্ডিয়া। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে হওয়া মহাদ্বৈরথে পাকিস্তানকে হেলায় ৭ উইকেটে হারিয়ে দিলেন রোহিত শর্মা-রা। পাকিস্তানকে ৪২ ওভারের মধ্যে ১৯১ রানে অল আউট করে, ১১৭ বল বাকি থাকতে সেই রান তুলে জিতল ভারত। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করল ভারত। অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তানের পর পাকিস্তান-টানা তিনটি ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালের দিকে এগোচ্ছেন রোহিত শর্মারা।

এদিন বল হাতে বুমরা, সিরাজ, কুলদীপদের দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর রোহিত শর্মা (৬৩ বলে ৮৬) ও শ্রেয়স আইয়ার (৫৩ অপরাজিত)-এর দারুণ ইনিংসে ভর করে জিতল ভারত। রোহিত একেবারে পিটিয়ে ছাতু করলেন হ্যারিস রউফদের।গত মাসেই কলম্বোয় এশিয়া কাপের সুপার সিক্সের পাকিস্তানকে একেবারে ধরাশায়ী করেছিলেন রোহিতরা, এদিনও ঠিক তাই হল। রান তাড়া করতে নেমে ডেঙ্গি সারিয়ে দলে ফেরা শুবমন গিল কয়েকটা দারুণ শট খেলে ব্যক্তিগত ১৬ রানে আউট হন। বিরাট কোহলিও ভালই খেলছিলেন। কিন্তু ৩টে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাসান আলির বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে ব্যক্তিগত ১৬ রানে ফিরে যান কোহলি। কিন্তু শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন রোহিত।

৬টা বাউন্ডারি ৬টা ওভার বাউন্ডরি মেরে নিশ্চিত সেঞ্চুরির পথেই এগোচ্ছিলেন ভারত অধিনায়ক। কিন্তু শাহিন আফ্রিদির বলে শেষ অবধি ৮৬ রানে আউট হয়ে যান। দারুণ জয়ের ম্যাচে শেষটাও দারুণ হল। হাফ সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থেকে ফর্মে ফিরে টিম ম্যানেজমেন্টকে স্বস্তি দিলেন শ্রেয়স আইয়ার। ব্যক্তিগত ১৯ রানে অপরাজিত থাকলেন কেএল রাহুল। ারি হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত ৮৬ রানে

এত একপেশেভাবে ম্যাচ শেষের সবচেয়ে বড় কারণ পাকিস্তানের ইনিংসের মাঝে বাবর আজমদের ব্যাটিং বিপর্যয়।  পাকিস্তান তাদের শেষ আটটা উইকেট হারায় ৩৬ রানে। ২ উইকেটে ১৫৫ থেকে বাবর আজমরা অল আউট হয়ে যান মাত্র ১৯১ রানে।

ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেলেন বুমরা

সুপার সানডে-তে পাকিস্তান তাদের শেষ আটটা উইকেট হারাল ৩৬ রানে। টানটান থ্রিলার ভারত-পাক ম্যাচ দেখার আশায় সেখানেই জল পড়ে গেল। ইনিংসের শুরুটা বেশ ভালই করেছিলেন দুই পাক ওপেনার ইমাম উল হক ও আব্দুল শফিক। ইমাম-শফিকদের ওপেনিং জুটি কিছুতেই ভাঙা যাচ্ছে না দেখে রোহিত-কোহলির চোখে মুখে উদ্বেগ ধরা পড়ে। সিরাজ আর পান্ডিয়া ফেরান দুই ওপেনারকে। পাকিস্তানের স্কোর যখন ২ উইকেটে ৭৩, তখন থেকে বাবর আজম-মহম্মদ রিজওয়ান তৃতীয় উইকেটে বেশ ভাল লড়ছিলেন। কিন্তু কুলদীপ-বুমরারা আক্রমণ আসতেই সব শেষ।

মহম্মদ সিরাজের দুরন্ত ডেলিভারিতে বাবর আজম (৫০) বোল্ড হতেই পাকিস্তানের পতন শুরু। পাক অধিনায়কের পর কুলদীপের ঘূর্ণিতে আউট হন সউদ শাকিল (৬)। তারপরেই ইফতিকার আহমেদ (৪)-কে বোল্ড করে দেন কুলদীপ। পাক ইনিংসের কফিনে শেষ পেরেকটা পোঁতেন বুমরা। দারুণ ফর্মে থাকা রিজওয়ান (৪৯)-কে বোল্ড করে দেন বুমরা। ২ উইকেটে ১৫৫ থেকে ৬ উইকেটে ১৬৮ হয়ে যায় পাকিস্তান। কমেন্ট্রি বক্সে বসে তখন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন বলছেন, এমন আচমকা ব্যাটিং বিপর্যয় ডেকে আনতে একমাত্র পাকিস্তানই পারে। ৯ নম্বরে নেমে হাসান আলি ১২ রান করেন। দলের প্রথম চারজন ব্যাটারের পর হাসান আলি (১২)-ই একমাত্র দু অঙ্কের রান করেন।