আগামী মাসে বিশ্বকাপের পর ভারতের টি-২০ দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। নিজের ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগ দেওয়ার জন্যই বিরাট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে হয়েছে। কিন্তু, একই সঙ্গে এটাও মনে হচ্ছে যে পেছনে লুকিয়ে আছে আরও রহস্য। যদিও কোহলি জানিয়েছে যে তিনি অন্য দুটি ফরম্যাটে অধিনায়ক থাকবেন। কিন্তু, কেউ এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে না যে তিনি ২০২৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতের ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালে, বিশ্বকাপ ছাড়াও প্রায় ২০টি দ্বিপাক্ষিক টি-২০ ম্যাচ রয়েছে, যেখানে কোহলি নেতৃত্ব দেবেন না।
বিসিসিআই-র (BCCI) এক সূত্র জানিয়েছে, "বিরাট জানতেন যে তাঁকে সাদা বলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। যদি টি-২০ বিশ্বকাপে দল ভালো ফল না করে, তবে তাঁকে যে সরিয়ে দেওয়া হবে তা বিলক্ষণ জানতেন তিনি। বিরাট কেবল নিজের উপর কিছুটা চাপ কমিয়েছেন। টি-২০ বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স যদি ভাল না হয়, তাহলে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক পদ থেকেও তিনি সরবেন।" আরও পড়ুন: IPL 2021: আইপিএল খেলতে আবু ধাবিতে পৌঁছে গেলেন আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনরা
সুতরাং, বিসিসিআই যদি অদূর ভবিষ্যতেও কোহলিকে ৫০ ওভারের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে কেউ অবাক হবে না। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেটে ভাগ্য দ্রুত পরিবর্তিত হয়। টি-২০ বিশ্বকাপ না জিততে পারলে বিরাট আগামীদিনে কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবেই দলে থেকে যাবেন। এমনিতেই অনুমান করা হয় যে ভারতীয় দলে ড্রেসিংরুমেও কোহলির ডেপুটি রোহিত শর্মাকে নেতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ট্রফির পর ট্রফি দিয়েছেন। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে খারাপ গোপন রহস্যগুলির মধ্যে একটি যে 'কিং কোহলি' ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পুরোপুরি সাপোর্ট পাননি।
তাঁর কাজ করার ধরন দেখে অনেকেই মন করেন বিরাট স্বৈরতন্ত্র চালান। সাউদাম্পটনে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দু'জন স্পিনার খেলানো হোক বা ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের আগে কোনও খেলোয়াড়কে ৪ নম্বর অবস্থানে সেট হতে না দেওয়া। বিরাটের অনেক সিদ্ধান্তই অবাক করেছে। অতি সম্প্রতি, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বিশ্বের ১ নম্বর অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না খেলানোর সিদ্ধান্তে চোখ কপালে ওঠে সমালোচকদের। বাবা হওয়ার জন্য তাঁর ছুটি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এক প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে, বিরাটের আরেকটি বড় সমস্যা হল তিনি জুনিয়র সতীর্থদের সঙ্গে কমিউনিকেট করেন না। মাঠের বাইরে, কোহলি আক্ষরিক অর্থেই অসম্পূর্ণ। জুনিয়র ক্রিকেটারদের হতাশা কাটাতে তিনি কোনও উদ্যোগ নেন না।
জানা গিয়েছে, হেড কোচ রবি শাস্ত্রী বিরাটের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে অধিনায়ক পদ থেকে সরে যেতে বলেন। বদলে ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করতে বলেন। এটাও বলা হচ্ছে যে কোহলি একটি প্রস্তাব নিয়ে নির্বাচন কমিটির কাছে গিয়েছিলেন। আর সেটা হল রোহিত শর্মাকে ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া। বিরাট চান কেএল রাহুল ওয়ানডে-র সহ অধিনায়ক হোন, আর ঋষভ পন্থ টি-২০ ফরম্যাটে এই দায়িত্ব পালন করুন। বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিরাটের এই পরামর্শ ভাল চোখে নেয়নি বিসিসিআই।