
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক অপূর্ব রত্ন হলো অসমের কাজিরাঙা অভয়ারণ্য। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান দেশ তথা বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত অভয়ারণ্য। ইউনেস্কো স্বীকৃত এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানটি বিখ্যাত একশৃঙ্গ গন্ডার, হাতি, বাঘ, জলভোঁদড় ও নানা প্রজাতির পাখির জন্য। প্রকৃতিপ্রেমী এবং বন্যপ্রাণী পর্যটকদের জন্য এটি এক স্বর্গসদৃশ গন্তব্য। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ঘনত্ব এই অরণ্যে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া বন্য জল মহিষ, বারশৃঙ্গার, ভারতীয় বাইসন, সম্বর হরিণ, মায়া হরিণ, বন্য শূকর এবং প্যারা হরিণ দেখতে পাওয়া যায়। কাজিরাঙায় তিনটি রেঞ্জে মূলত সাফারি হয়। বাগরি, কোহরা ও অগরাতলি। দুপুর ২টো থেকে জিপ সাফারি হয়। পর দিন ভোরের হাতি সাফারির বুকিং সেরে নিন। কাজিরাঙায় হাতি আর জিপের রাস্তা আলাদা।
কীভাবে যাবেন:
গুয়াহাটি হ’ল সবচেয়ে কাছের বড় শহর, যা দেশের প্রায় সব বড় শহরের সঙ্গে বিমান ও ট্রেনে যুক্ত। গুয়াহাটি থেকে কাজিরাঙা প্রায় ২০০ কিমি দূরে, যাত্রাপথে পড়ে পাহাড়, বন ও চা-বাগানে ঘেরা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য। বাস, প্রাইভেট কার বা ট্যাক্সি ভাড়া করে সহজেই পৌঁছানো যায়।
কোথায় থাকবেন:
কাজিরাঙার আশেপাশে অনেক রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও লজ রয়েছে। “IORA - The Retreat”, “Bonhabi Resort” বা “Wild Grass Lodge” নামক রিসোর্টগুলো জনপ্রিয়। অনেক রিসোর্টই জঙ্গল সাফারি ও লোকাল গাইডের ব্যবস্থাও করে।
কি দেখবেন/করবেন:
জিপ সাফারি ও এলিফ্যান্ট সাফারির মাধ্যমে পর্যটকরা খুব কাছ থেকে বন্যপ্রাণী দেখতে পারেন। গন্ডার ছাড়াও দেখা মেলে বুনো মহিষ, বার্কিং ডিয়ার ও নানান পাখি। এছাড়া কাছাকাছি কার্বি আংলং পাহাড় ও অসমিয়া লোকসংস্কৃতির অভিজ্ঞতাও নেওয়া যায়।
ভ্রমণ পরামর্শ:
নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়টা কাজিরাঙা ঘুরে দেখার জন্য সবচেয়ে ভালো। বর্ষায় পার্ক বন্ধ থাকে। সাফারির জন্য আগে থেকেই বুকিং করে রাখা ভালো।
সবমিলিয়ে, কাজিরাঙা শুধুমাত্র একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য নয়, এটি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের এক অপরূপ উপস্থাপনা, যা একবার ঘুরে এলে স্মৃতিতে গেঁথে থাকে চিরকাল।