করোনা আবহেই বাঙালি মেতে উঠেছিল দুর্গোৎসবে। করোনা বিধি মেনে উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়লেও পরিবার-পরিজন নিয়ে পুজোর চারটে দিন আনন্দে মেতে উঠেছিল সবাই। দুর্গাপুজোর রেশ কাটিয়ে ঘরে ঘরে হয়েছে লক্ষ্মীর বন্দনা। এবার কালীপুজোর পালা। শাস্ত্রমতে, এবছর ১৪ নভেম্বর কালীপুজো। কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালিত হয়; তবে বাংলা ক্যালেন্ডার মতে, ২৮ কার্তিক ভূত চতুর্দশী পালন করা হবে। করোনা আবহে বাড়িতেই রীতি মেনে আচার অনুষ্ঠানে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন সকলে।
কথিত রয়েছে, চামুণ্ডারূপী চৌদ্দ ভূত দিয়ে অশুভ শক্তিকে ভক্তের বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্যে মা কালী নেমে আসেন মর্ত্যে। 'ভূত চতুর্দশী' সম্পর্কে এই তথ্য (Information) তো আপনার জানা। এটা মূলত বাঙালি হিন্দুর উৎসব। কারণ বাংলা ছাড়া ভারতের অন্যান্য রাজ্যে হিন্দুরা সেভাবে এই 'ভূত চতুর্দশী' উদযাপন করে না। পশ্চিম ভারতে এই তিথিকে ‘নরক চতুর্দশী’(Naraka Chaturdashi) বলে। আধুনিক যুগে ভূত চতুর্দশী পালনকে অনেকেই অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কার বলে থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগ বাঙালি পরলোকগত পিতৃপুরুষের আত্মার সদ্গতি কামনায় প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এই প্রথাকে খুব সাড়ম্বরে পালন করে থাকেন।
অনেকের মতে, 'ভুত চতুর্দশী'র দিন পরলোকগত চোদ্দ পুরুষের আত্মারা নিজ নিজ বাড়িতে নেমে আসেন। তাই তাদের আসা যাওয়ার পথকে আলোকিত করতেই নাকি এই দিন সন্ধ্যাবেলা প্রদীপ জ্বলানোর রীতি। আবার ভিন্ন মতে, চামুণ্ডারূপী চৌদ্দখানা ভূত দিয়ে ভক্তবাড়ি থেকে অশুভ শক্তিকে তাড়াবার জন্যে মা কালী নেমে আসেন। 'ভূত চতুর্দশী'র তিথিতে অসংখ্য ভূত-প্রেত অনুচর নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। আর মর্ত্যবাসীরা তাঁদের দূরে রাখতে ১৪ শাক খেয়ে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১৪ ফোঁটা দিয়ে এই তিথিকে উদযাপন করে থাকেন। এই ১৪ শাক হল- ওল, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিলঞ্চ, জয়ন্তী, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, ভাটপাতা, কেঁউ, এবং শৌলফ।